টলিপাড়ায় বিচ্ছেদের কালো মেঘ জমেছে! যিশু-নীলাঞ্জনার ভাঙা দাম্পত্যের মাঝেই চুপিসাড়ে ডিভোর্সের ঘোষণা সেরেছেন অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী মধুজা। একই পথে হেঁটে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক দশকের দাম্পত্যে ইতি টানার ঘোষণা সারলেন পরিচালক পারমিতা মুন্সী।
শনিবার, প্রয়াত ‘সন্তান’-এর জন্মদিনে স্বামীর থেকে আলাদা হওয়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানালেন ‘গুহামানব’ পরিচালক। পারমিতার স্বামীও টলিপাড়ার অতি পরিচিত নাম, শিল্প নির্দেশক সুদীপ ভট্টাচার্য। ফেসবুক পোস্টে পারমিতা জানান, তাঁর চারপেয়ে সন্তান নিউটন বেঁচে থাকলে বয়স হত ৯ বছর। তাঁদের আদরের সারমেয়ই নাকি ছিল দাম্পত্যের সেতু-বন্ধন। তাঁর মৃত্যুর পর সেই ব্রিজ ভেঙে গেছে।
সুদীপের সঙ্গে তাই কোনওভাবেই এক ছাদের তলায় থাকা আর সম্ভবপর হয়নি। আবেগঘন পোস্টে পারমিতা লেখেন, 'আজ আমার সন্তান নিউটনের জন্মদিন। নিউটন বেঁচে থাকলে আজ ৯ বছর বয়স হতো। নিউটনের চলে যাওয়া আমার কাছে সন্তানশোক। সেইশোকে শারীরিক, মানসিক বিধ্বস্ত আমি প্রায় একবছর শয্যাশায়ী ছিলাম। ২০১৫ সালের, ২৮ শে সেপ্টেম্বর নিউটনকে আহত অবস্থায় রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছিলাম। নিউটন ছিল আমার আর সুদীপের বিবাহিত জীবনের একটা ব্রিজ ফ্যাক্টর। নিউটন চলে যাওয়ার পর সেই ব্রিজ ভেঙে যায়। আমি আর সুদীপ বুঝতে পারি, একসঙ্গে একছাদের নীচে আমরা আর থাকতে পারছি না। না, কোনও তৃতীয় ব্যক্তি আমাদের দাম্পত্য সম্পর্কে কোনদিনই ছিল না। অনেকসময় একসঙ্গে থাকতে থাকতে দু'জন ভালো মানুষেরও একসঙ্গে পথচলা ইমোশনাল ব্যাগেজ তৈরী করে'।
পরিচালক আরও জানান, দীর্ঘ এক বছর ধরেই এক ছাদের তলায় থাকেন না তাঁরা। অবশেষে আইনি পথে হেঁটে আলাদা হয়েছেন। তবে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে আলাদা হলেও ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের সূত্রে দুজনের যোগসূত্র রয়েই যাবে, জানিয়েছেন পরিচালক। তিনি লেখেন, ‘দীর্ঘ ৯ বছরের বিবাহিত সম্পর্ককে নিয়ে পারস্পরিক বোঝাপড়ায় আইনি বিচ্ছেদের পথে হেঁটেছি আমরা। আমাদের ৯ বছরের বিবাহিত জীবনের শেষ হয়েছে। স্বামী-স্ত্রী হিসেবে আমাদের যোগ না থাকলেও, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সূত্রে আমাদের একটা যোগ তো রয়েই গেল। সুদীপ খুব ভালো শিল্প নির্দেশক। অনেক বড় পরিচালকদের সঙ্গে অনেক ভালো ভালো সিনেমা, টেলিভিশন সিরিয়ালে সুদীপ শিল্প নির্দেশক হিসেবে করেছে। আমার এযাবৎকালের ডিরেক্টোরিয়াল সব কাজে সুদীপ আর্ট ডিরেক্টর হিসেবে ছিল। সুদীপ ভট্টাচার্য ইন্ডাস্ট্রিতে শিল্প নির্দেশক হিসেবে আরও অনেক ভালো ভালো কাজ দর্শকদের উপহার দিক, এই শুভেচ্ছা রইল।’
দেখনকারি কিংবা মেকি বিষয়ে আপত্তি পারমিতার। সেই কারণেই খোলখুলিভাবে বিবাহবিচ্ছেদের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি লেখেন, ‘সুদীপ ভট্টাচার্যর সঙ্গে আমার বিবাহিত জীবনের ইতি ঘটেছে। ভান, ভড়ং, দেখনদারি অভিনয় করে দাম্পত্য সম্পর্ক টিঁকিয়ে না রাখার এই সিদ্ধান্ত একজন আধুনিক মানুষ হিসেবে আমি নিয়েছি। এই পোস্ট করার উদ্দেশ্য সবাইকে বিষয়টা অফিসিয়ালি ইনফর্ম করা। যাতে ভবিষ্যতে কোনও তথ্যগত জটিলতা না তৈরী হয়।’

সব শেষে তাঁর সংযোজন, ‘২০২৪ সাল খুব রোলার কোস্টার বছর। অনেক কিছু শিখিয়ে গেল। শিখিয়ে গেল কোথাও কোনও নিয়ম নেই। দিয়ে গেল নিয়মের গ্যাঁড়াকলে বাঁধা না থেকে ঋজু মেরুদন্ডী মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার শিক্ষা। সবাই ভালো থাকবেন। ঈশ্বর সহায় হোক সবার।’