‘তুমিহীনা এ হৃদয় আমার একাকী অসহায়…’, এই সুরই বাজছে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা শাফিন আহমেদ ভক্তদের মনে। চলে গেলেন বাংলা ব্র্যান্ড মাইলস-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শাফিন আমহেদ। যাঁর গাওয়া ‘ফিরিয়ে দাও…’ গান শুনে বড় হয়েছে দুই বাংলার নব্বইয়ের প্রজন্ম।
বৃহস্পতিবার সকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার এক হাসপাতালে মৃত্যু হয় বাংলাদেশের এই প্রবাদপ্রতিম সঙ্গীতশিল্পীর। ছাত্র আন্দোলনে জেরবার পড়শি দেশের বিনোদন জগতে শাফিনের মৃত্যু সংবাদ কাঁটা হয়ে বিঁধল। জানা গিয়েছে, ভারতীয় সময় সকাল ৬.২০ নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। শিল্পীর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।
ওপার বাংলার সংবাদমাধ্যমকে শাফিনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন ছোট ভাই হামিন। জানা গিয়েছে, কনসার্টে অংশ নিয়ে সম্প্রতি মার্কিন মুলুকে গিয়েছিলেন শাফিন। কিন্তু ২০ জুলাই ভার্জিনিয়ায় শো করবার আগেই অসুস্থ হয়ে পড়েন শিল্পী। বাতিল করতে হয় অনুষ্ঠান। ওই দিনই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। এরপর মাল্টি অর্গ্যান ফেলিউরের শিকার হন শাফিন, দেওয়া হয় লাইফ সাপোর্টে, তবে শেষরক্ষা হল না।
শাফিন আহমেদের ভাই বৃহস্পতিবার রাতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন দাদার মরদেহ ফিরিয়ে আনতে। ১৯৬১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি জন্ম শাফিন আহমেদের। মা কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী ফিরোজা বেগম এবং বাবা সংগীতজ্ঞ কমল দাশগুপ্ত। ছোট থেকেই গানের জগতেই মানুষ হয়েছেন তিনি, বাবার কাছে শিখেছেন উচ্চাঙ্গসংগীত আর মায়ের কাছে নজরুলগীতি।
নয়ের দশক ভাই হামিনকে নিয়ে মাইলস ব্যান্ড গড়ে তুলেছিলেন শাফিন। যা আজও বাংলাদেশের অন্যতম নামী রকব্যান্ড। দীর্ঘদিন একসঙ্গে পথচলার পর মাইলস থেকে আলাদা হন শাফিন। রিদম অব লাইফ নামে নতুন একটি ব্যান্ড প্রতিষ্ঠা করেন।
শাফিন আহমেদের গাওয়া তুমুল জনপ্রিয় কিছু গানের মধ্যে রয়েছে ‘আজ জন্মদিন তোমার’ ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘জ্বালা জ্বালা অন্তরে’, ‘ফিরিয়ে দাও হারানো প্রেম’, ‘ফিরে এলে না’, ‘হ্যালো ঢাকা’, ‘জাতীয় সংগীতের দ্বিতীয় লাইন’ প্রভৃতি। তিনি শুধু গান গাইতেন এমন নয়, গিটার হাতেও মঞ্চে ঝড় তুলতেন। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ এপার-ওপার দুই বাংলা। শাফিন রেখে গেলেন স্ত্রী এবং তিন সন্তানকে।