বিগত দুই দশক ধরে মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। মাঝে দুই বছর অবশ্য গদিতে ছিল কংগ্রেস। ২০১৮ সালে বিজেপি হেরেছিল কংগ্রেসের কাছে। তবে পরবর্তীতে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া শিবির বদল করায় বদলে যায় অঙ্ক। কমল নাথের সরকারের পতন ঘটে। চতুর্থবারের মতো মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন শিবরাজ সিং চৌহান।
শিবরাজ সিং চৌহান এবং জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া
মধ্যপ্রদেশে বিজেপির জয়জয়কার অব্যাহত। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ তারা ১৫৮টি আসনে এগিয়ে। অপরদিক কংগ্রেস এগিয়ে মাত্র ৭০টি আসনে। এই আবহে শিবরাজ সিং চৌহান বলেন, ‘মোদীজি মধ্যপ্রদেশের মনে আর মধ্যপ্রদেশের মনে মোদীজি। তিনি এখানে জনসভা করেছেন এবং জনগণের কাছে আবেদন করেছেন এবং তা মানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছে। এই ভোটের ফলাফল তারই নমুনা। ডবল-ইঞ্জিন সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের স্কিমগুলিকে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করেছিল এবং এখানে যে স্কিমগুলি তৈরি হয়েছিল তাও মানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছিল। মধ্যপ্রদেশ একটি পরিবারে পরিণত হয়েছে...আমি আগেও বলেছিলাম যে বিজেপি অনায়াসে বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। কারণ আমাদের প্রতি মানুষের ভালোবাসা সর্বত্র দৃশ্যমান।’ (আরও পড়ুন: মধ্যপ্রদেশে গেরুয়া ‘সুনামি’, পদ্মপাঁকে হারিয়ে গেলেন কংগ্রেসের কমল)
উল্লেখ্য, বিগত দুই দশক ধরে মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। মাঝে দুই বছর অবশ্য গদিতে ছিল কংগ্রেস। ২০১৮ সালে বিজেপি হেরেছিল কংগ্রেসের কাছে। তবে পরবর্তীতে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া শিবির বদল করায় বদলে যায় অঙ্ক। কমল নাথের সরকারের পতন ঘটে। চতুর্থবারের মতো মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন শিবরাজ সিং চৌহান। তবে এবারের নির্বাচনী প্রচারে প্রকৃতপক্ষে বিজেপির 'মুখ' ছিলেন মোদী। এই আবহে মধ্যপ্রদেশে বিজেপি সরকার গঠন করলে শিবরাজকেই মুখ্যমন্ত্রী রাখা হবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হতে পারে। কারণ এবার মধ্যপ্রদেশে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে টিকিট দিয়েছিল বিজেপি। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর। এই পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত শিবরাজকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া হয় কি না, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হতেই পারে।
এরই মাঝে মধ্যপ্রদেশে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার ম্যাজিক দেখা যায়। ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে যে অঞ্চলে বিজেপির আসন সংখ্যা বেড়েছে, তার অনেকটা কৃতিত্ব প্রাপ্য সিন্ধিয়ার। গতবারের তুলনায় এবারে চম্বল অঞ্চলে ১৯টি আসন বেড়েছে বিজেপির। মালওয়ায় বেড়েছে ১৭টি আসন। এই অঞ্চলগুলি সিন্ধিয়া গড় হিসেবেই পরিচিত।
উল্লেখ্য, ২৩০ আসন বিশিষ্ট মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় ম্যাজিক ফিগার ১১৬। এবারের নির্বাচনে সেই রাজ্যে ভোট পড়েছে ৭৭.১৫ শতাংশ। ২০১৮ সালে এই ভোটদানের হার ছিল ৭৫.৬৩ শতাংশ। এই রাজ্যে হাত শিবিরের হেভিওয়েটদের মধ্যে আছেন দিগ্বিজয় সিং, কমল নাথরা। এদিকে বিজেপির হেভিওয়েটরা হলেন শিবরাজ সিং চৌহান, নরেন্দ্র সিং তোমররা। এছাড়াও মধ্যপ্রদেশের প্রচারে গেরুয়া শিবিরের তরফ থেকে 'মুখ' ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী স্বয়ং। এই আবহে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা এবং উন্নয়নের মতো ইস্যুর পাশাপাশি মেরুকরণের অঙ্কেও ভোট হয়েছে এই রাজ্যে।