কিছুদিন আগেও তিনি ছিলেন দুঁদে পুলিশ আধিকারিক। আর আইপিএসের চাকরি ছেড়ে সেই প্রসূন বন্দ্যোপাধ্য়ায় বর্তমানে উত্তর মালদা থেকে তৃণমূলের প্রার্থী। প্রচারে নেমেই তিনি একেবারে তৃণমূল নেতাদের মতোই ব্যাট ধরতে শুরু করে দিয়েছেন। প্রচারে জোর আনতে নানা ধরনের মন্তব্যও করছেন। প্রচারসভায় তিনি বলেন, 'বিএসএফ প্যারামিলিটারি সবাইকে বলছি, আইনের মধ্য়ে থাকুন। আমরা আইনের মধ্য়েই আছি। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ,অবাধ ও স্বচ্ছ হোক। প্যারামিলিটারি যদি ভয় দেখায় তবে আমারও নাম প্রসূন বন্দ্যোপাধ্য়ায়, ম্যায় হুঁ না।' একেবারে নরমে, গরমে হুঁশিয়ারি প্রসূনের। দিন কয়েক আগেও তিনি ছিলেন পুলিশ আধিকারিক। সংস্কৃতি জগতেও তাঁর অবাধ বিচরণ। ভালো নাটক করেন। আর সেই প্রসূনের গলায় এবার একেবারে অন্য়রকম সুর। এখানেই থেমে থাকেননি প্রসূন। তিনি বলেন, নির্বাচন সদনকে বসিয়ে রাখতে হবে এখানে। এই স্কুলেই বসিয়ে রাখতে হবে। তাঁদের জল দেবেন। ওঁদেরকে অযত্ন করবেন না। ওঁরাও চাকরি করেন। শুধু বলবেন প্রসূন বন্দ্যোপাধ্য়ায় খেলতে এসেছে। বুটের দপদপানি, একে ৪৭, এসএলআর দিয়ে কোনও লাভ নেই। শুধু বলবেন ডাকছি। আধ ঘণ্টার মধ্য়ে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্য়ায় ঢুকছে। ওঁ বুঝে নেবে। আইন কানুন অবজারভার সব বুঝে নেবে। আধিকারিকদের সম্মান দেবেন। কুকথা বলবেন না। বাহিনীকে সম্মান দেবেন। ততক্ষণ দেবেন যতক্ষণ তারা আপনাকে সম্মান দিচ্ছে। সবটা আমার উপর ছেড়ে দিন। রাস্তায় নামব। চারদিক অবরূদ্ধ হয়ে যাবে। ভারতবর্ষ দেখবে উত্তর মালদায় ভোট হচ্ছে। শাহরুখ খান অভিনীত ছবির জনপ্রিয় ডায়ালগ এখন প্রসূনের মুখে। প্রসূন বন্দ্যোপাধ্য়ায় নিজেও নাটক করেন বাস্তব জীবনে। চাকরি করার সময়ও তিনি নাটক করতেন বালুরঘাটে। আর ভোট ময়দানে নেমে একেবারে ফিল্মি ডায়ালগ বলছেন প্রসূন। আর বিজেপি বলছেন চাকরি করার সময়তেও তিনি ছিলেন দলদাস। সকলেই জানতেন তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের কথা। আর এখন তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন ভূমিকায়। সেখানেও তিনি এইসব কথা বলছেন। উত্তর মালদায় জমে উঠেছে ভোটের লড়াই। একসময়ের কংগ্রেসের গড়ে এখন বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্য়ে রাজনৈতিক জমি দখলের লড়াই। সেই লড়াইতে এবার শরিক হয়েছেন প্রাক্তন পুলিশকর্তা। আর সেই মাঠে খেলতে নেমে একেবারে পোড় খাওয়া তৃণমূল নেতাদের মতোই তিনি নানা মন্তব্য করছেন। তবে শেষ পর্যন্ত এই আসনটা কার দখলে থাকে সেটাই দেখার।