ফের একবার তৃণমূলি মাফিয়া শেখ শাহজাহানকে বাংলাদেশি বলে আক্রমণ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার চন্দননগরে হুগলি কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সমর্থনে জনসভায় তিনি দাবি করেন, নিরাপদ সরদার শেখ শাহজাহানকে গুন্ডা হিসাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এনেছিল। শুভেন্দুবাবুর এই দাবিতে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। সঙ্গে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে শেখ শাহজাহানের নাগরিকত্ব নিয়েও।
শুভেন্দুর বিস্ফোরক দাবি
মঙ্গলবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে বাড়ির সিল খুলে দেওয়ার জন্য আবেদন করেন শেখ শাহজাহান। সেব্যাপারে বলতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘শেখ শাহজাহান বাংলাদেশের শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের নেতা ছিল। আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র এর থেকে বেশি কিছু বলব না। ওকে এদেশে নিয়ে এসেছে এই নিরাপদ সরদার। উদ্বাস্তু হিসাবে নয়, গুন্ডা হিসাবে। ও ২০১৩ সালে তৃণমূলে যোগদান করে। তার আগে ও সিপিএম করত। ওর নেতার নাম মোসলেম শেখ। তিনিও লুঠ করতেন।’
শাহজাহানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ
রেশন দুর্নীতি ও ইডির ওপরে হামলার ঘটনায় গ্রেফতার হয় তৃণমূলি মাফিয়া শেখ শাহজাহান। সন্দেশখালির বিস্তীর্ণ এলাকায় জমি দখল, মহিলাদের ওপর যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এই অভিযোগে গত ফেব্রুয়ারিতে উত্তাল হয়ে ওঠে সন্দেশখালি। ৫ জানুয়ারির ওই ঘটনার পর ফেরার হয়ে যায় শেখ শাহজাহান। এর পর তার সমর্থনে বিধানসভার ভিতরে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দাবি করেন, শাহজাহানকে গ্রেফতার করে সন্দেশখালি দখল করতে চাইছে BJP ও RSS. শাহজাহানের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ওকে কি কেউ হামলা করতে দেখেছে? আমি তো দেখিনি।’
আদালতের চাপে গ্রেফতারি
৫৫ দিন ফেরার থাকার পর আদালতের চাপে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হয় পুলিশ। এর পর শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে হস্তান্তরের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশের পরেও শাহজাহানকে কেন্দ্রীয় এজেন্সির হেফাজতে হস্তান্তর করতে গড়িমসি শুরু করে রাজ্য পুলিশ। অবশেষে আদালতের ভর্ৎসনার মুখে সিবিআইয়ের হাতে শাহজাহানকে হস্তান্তর করে রাজ্য পুলিশ। সিবিআই হেফাজত শেষে শাহজাহানকে হেফাজতে নেয় ইডি।
কোটি কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ
তদন্তে ইডির দাবি, বিদেশে চিংড়ি রফতানির নামে গত ১১ বছরে অন্তত ১৩৭ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে শেখ শাহজাহান। গোটা চক্রটি ফাঁস করতে শাহজাহানের একাধিক অনুগামীকেও গ্রেফতার করেছেন ইডির তদন্তকারীরা।
সন্দেশখালিতে মহিলাদের ওপর নির্যাতনের কথা স্বীকার করে নিলেও তৃণমূলের দাবি, জমি সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যা মিটিয়ে দিয়েছে প্রশাসন।