গত রবিবারই দিনহাটার সিতাই বিএসএফ ক্যাম্প পরিদর্শন করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ভারত–বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমানা পরিদর্শন করে বিএসএফের কাজের প্রশংসা করেন। বিএসএফ সূত্রে দাবি, সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া এলাকায় রাতে সাধারণ মানুষের আসা যাওয়ায় বিধিনিষেধ রয়েছে। অযথা রাজনৈতিক রং লাগিয়ে প্রচার করা হচ্ছে।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ।
এবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের দিকে তির নিক্ষেপ করলেন রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। তাঁর মন্তব্য রীতিমতো শোরগোল ফেলে দেয় প্রত্যেকবার। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের ভোটপ্রচারে বাধা দিচ্ছে বিএসএফ বলে অভিযোগ তুললেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। তাঁর দাবি, সম্প্রতি রাজ্যপাল এসেছিলেন উত্তরবঙ্গে। তারপর বিএসএফের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যপাল। সেই বৈঠকের পর থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের প্রচারে বাধা দেওয়া শুরু করে বিএসএফ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে বিএসএফকে নিয়ে উদয়ন গুহর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ব্যাপক শোরগোল ফেলে দিয়েছে।
এদিকে কয়েকদিন আগে কোচবিহারে নির্বাচনী প্রচারে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন তিনিও বিএসএফের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। এবার উদয়ন গুহ সরাসরি অভিযোগ তুললেন। তাও আবার রাজ্যপালকে জড়িয়ে দিলেন। ইতিমধ্যেই সীমান্ত সিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য পুলিশ। কেন্দ্রীয় বাহিনী গ্রামে টহল দিতে সুরু করেছে। হাতে আর বেশি সময় নেই। কারণ আজ বুধবার। আর দু’দিন কাটলেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন শুরু হয়ে যাবে। শনিবার ৮ জুলাই প্রত্যেক গ্রামে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেখানে রাজ্যপালের বৈঠকের পর বিএসএফের বাড়াবাড়ির কথা উল্লেখ রাজ্যের মন্ত্রীর বেশ ইঙ্গিতবহ।
ঠিক কী বলেছেন উদয়ন? এদিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী একটি ফেসবুক পোস্ট করেন। সেখানে সরাসরি রাজ্যপালকে জড়িয়ে উদয়ন গুহ সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘রাজ্যপাল দিনহাটার সিতাইয়ে এসে বিএসএফের সঙ্গে বৈঠক করেন। তারপরই শুকারুকুঠি এলাকায় আমাদের দলের কর্মীরা ভোটপ্রচারে গেলে তাঁদের বাধা দিচ্ছে বিএসএফ। রাজনৈতিক স্বার্থেই তারা এমনটা করছে।’ আর ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘রাজ্যপাল গতকাল বিএসএফ–এর সঙ্গে কথা বলার পর, বিএসএফ সক্রিয়ভাবে সীমান্ত এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের প্রচারে বাধার সৃ্ষ্টি করছে।’
বিজেপি–বিএসএফ ঠিক কী বলছে? উদয়ন গুহের এমন মন্তব্য এবং ফেসবুক পোস্ট আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। বাধ্য হয়ে কোচবিহার দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘পরিবার–আত্মীয়স্বজন ছেড়ে দেশের সুরক্ষায় সীমান্তে এসে ডিউটি করেন বিএসএফ জওয়ানরা। সীমান্তে রাত জাগেন। এমন অনৈতিক অভিযোগ করা ঠিক নয়। রাজ্যপাল দলমত নির্বিশেষে আক্রান্ত সমস্ত মানুষের সঙ্গে দেখা করেছেন। জওয়ানদের উজ্জীবিত করতে সীমান্তে যান। তৃণমূল নেতারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অভিযোগ করছেন।’ গত রবিবারই দিনহাটার সিতাই বিএসএফ ক্যাম্প পরিদর্শন করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ভারত–বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমানা পরিদর্শন করে বিএসএফের কাজের প্রশংসা করেন। আর বিএসএফ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া এলাকায় রাতে সাধারণ মানুষের আসা যাওয়ায় বিধিনিষেধ রয়েছে। অযথা রাজনৈতিক রং লাগিয়ে প্রচার করা হচ্ছে।