পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন–পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন চলছে স্ক্রুটিনির কাজ। আর এই আবহে দেখা গেল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামেই সমস্ত বুথে প্রার্থী দিতে পারেনি বিজেপি। আসলে প্রার্থী জোগাড় করা যায়নি। ফলে সেসব আসনে তৃণমূল কংগ্রেস বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতছে। সুতরাং এটা প্রমাণ হয়ে গেল একুশের নির্বাচনের পর থেকে এখনও পর্যন্ত সংগঠন শক্তিশালী করতে পারেনি গেরুয়া শিবির। নন্দীগ্রামে দুটি ব্লক। তার এক তৃতীয়াংশ আসনে বিজেপি প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়েছে। নিজের বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামে এমন ছবি প্রকাশ্যে আসতেই মুখ পুড়ল বিরোধী দলনেতার।
তবে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসেরও এখানে একটা ঘটনা ঘটেছে। সংগঠন তাদের শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে ঠিকই। কিন্তু এখানে বহু নেতা–কর্মীকে পদত্যাগ করিয়ে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দেখা যাচ্ছে, তাঁদের একাংশই এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেও গিয়েছেন। সুতরাং সব মিলিয়ে নন্দীগ্রাম আবার সংবাদ শিরোনামে উঠে এল। আর বিজেপির অবস্থা তো তথৈবচ। কারণ নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ১৮৫টি আসনের মধ্যে ৬৬টিতে প্রার্থী দিতেই ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি। পঞ্চায়েত সমিতির ৩০টি আসনের মধ্যে ৭টিতে প্রার্থী নেই। নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের কেন্দেমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২২টি আসনের একটিতেও প্রার্থী নেই বিজেপির।
এদিকে কাঁথির সভা থেকে মারিশদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ঝুনুরানি মণ্ডল, উপপ্রধান রামকৃষ্ণ মণ্ডল এবং অঞ্চল সভাপতি গৌতম মিশ্রকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেটা ঘটেও। সূত্রের খবর, ঝুনুরানি এবং গৌতম এবার গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দেন। এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তা খোঁজ করতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কী করে তাঁরা প্রার্থী হলেন? তা নিয়ে চলছে বিস্তর চর্চা। যদিও এই নিয়ে এখনই কেউ মুখ খুলতে চাইছেন না।
অন্যদিকে কালিচরণপুরে ১৭টি আসনের মধ্যে ৭টিতে বিজেপি নেই। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দাউদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৭টির মধ্যে ৮টি আসনে বিজেপি প্রার্থী দিতে পেরেছে। সামসাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৮টির মধ্যে ৮টি প্রার্থী দিয়েছে। মহম্মদপুরে ১৭টি আসনের মধ্যে ৯টিতে প্রার্থী দেওয়া সম্ভব হয়েছে। নন্দীগ্রামে ১৭টির মধ্যে ১১টি এবং ভেকুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৫টির মধ্যে ২৩টি আসনে প্রার্থী দিয়ে হাফ ছেড়ে বেঁচেছে বিজেপি। পঞ্চায়েত সমিতি ৩০টি আসনের মধ্যে মাত্র ৭টি আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে বিজেপি। এই বিষয়ে নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘ফাঁকা কলসির আওয়াজ বেশি সেটা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।’