ভারতীয় ফাস্ট বোলার প্রসিধ কৃষ্ণা বর্তমানে বেঙ্গালুরুতে ন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে পুনর্বাসন করছেন। ২৭ বছর বয়সি কৃষ্ণা ২০২২ সালে জিম্বাবোয়ে সফরের সময় চোট পেয়েছিলেন, যে কারণে তিনি এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্রিকেট থেকে দূরে রয়েছেন। কর্ণাটকের এই ফাস্ট বোলার এখনও পর্যন্ত তাঁর সংক্ষিপ্ত ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন। তিনি ১৪ ম্যাচে ২৩.৯২ গড়ে এবং ৫.৩২ ইকোনমিতে ২৫টি উইকেট নিয়েছেন।
চোট পাওয়ার কারণে দীর্ঘদিন ক্রিকেট থেকে দূরে থাকার পর সম্প্রতি বড়সড় বিবৃতি দিয়েছেন প্রসিধ কৃষ্ণা। তিনি বলেছেন, চোট একজন ফাস্ট বোলারের ক্যারিয়ারের একটি অংশ। সম্প্রতি, তিনি আরও প্রকাশ করেছেন যে কীভাবে তিনি সেই কঠিন পর্যায়ে গিয়েছিলেন এবং সেটার সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করেছিল। প্রসিধ কৃষ্ণা নিজেকে প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রস্তুত করছেন।
প্রসিধ কৃষ্ণা ইএসপিএন ক্রিকইনফো-এর সঙ্গে একটি কথোপকথনের সময় বলেছিলেন, ‘আমি সেই লোকদের মধ্যে একজন নই যারা কোনও বিষয়ে উত্তেজিত বা নার্ভাস হয়ে যায়। আমি এটি পরিমিতভাবে গ্রহণ করি। ইনজুরি একজন ফাস্ট বোলারের ক্যারিয়ারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মানে, সকলেই যখন প্রচুর ক্রিকেট খেলছে তখন এটা সহজ নয়। অনেক কিছু ঘটছে এবং আপনি বাড়িতে বসে আছেন এবং নির্বাচনের জন্য সত্যিই উপলব্ধ নন, তবে আমি আশাবাদী।’ বোর্ড অফ কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) সম্প্রতি কৃষ্ণার ফিটনেস সম্পর্কে একটি আপডেট দিয়েছে এবং বলেছে যে ফাস্ট বোলার তাঁর পুনর্বাসনের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। মেডিকেল টিম তাঁর অগ্রগতিতে খুশি এবং প্রস্তুতি ম্যাচের পর তাঁকে মূল্যায়ন করার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, প্রসিধ কৃষ্ণা চোটের কারণে আইপিএল ২০২৩ তেও খেলতে পারেননি এবং রাজস্থান রয়্যালস তাঁর জায়গায় সন্দীপ শর্মাকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। আইপিএল ২০২২ মরশুম কৃষ্ণার জন্য দুর্দান্ত ছিল। তিনি ১৭ ম্যাচে ২৯ গড়ে ১৯ টি উইকেট নিয়ে তাঁর দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন। নিজের চোট নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রসিধ কৃষ্ণা বলেন, ‘এনসিএ অস্ত্রোপচারের জন্য নিউজিল্যান্ডে আমার ভিসার ব্যবস্থা করেছিল। সে সময় ভিসা প্রসেসিং হতে একটু সময় নিচ্ছিল। কিন্তু নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিল এবং আমার মেডিকেল ভিসা দ্রুত হয়ে যায়। চারদিক থেকে অনেক চেষ্টা করা হচ্ছিল। অস্ত্রোপচার হয়েছিল (ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি)। আমি কয়েক দিনের জন্য একটু ব্যাথা অনুভব করেছিলাম কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে আমি অস্ত্রোপচারের দিনই হাঁটা শুরু করি। আমি তিন দিন হাসপাতালে এবং আরও দুই সপ্তাহ সেই দেশে ছিলাম। তারপরে আমি ভারতে ফিরে আসি, চার থেকে ছয় সপ্তাহের জন্য ছুটি পেয়েছিলাম, এবং তারপরে পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া আবার শুরু হয়। দৌড়ে ফিরে আসা, বোলিংয়ে ফিরে আসা এবং এই সমস্ত কিছু। অস্ত্রোপচারের দিন থেকে (বোলিংয়ে ফিরে আসতে) আমার প্রায় ২৪-২৬ সপ্তাহ লেগেছে এবং আমি এখন মাঠে নামতে প্রস্তুত। আমি কয়েকটি অনুশীলন গেম খেলেছি। আমি একটি KSCA লিগ খেলাও খেলেছি। আমার বেশ ভালো লাগছে। আমি চোট হওয়ার আগে যেমন ছিলাম তেমনই স্বাভাবিক বোধ করছি।’
দলে ফিরে আসা নিয়ে কথ বলতে গিয়ে প্রসিধ কৃষ্ণা আরও বলেন, ‘আমি ফিরে আসার জন্য উত্তেজিত। আমার অস্ত্রোপচারের পরে আমি প্রথম যে জিনিসটি ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম তা হল, ‘আমি কি আবার একটি ছোট বাচ্চা হতে পারব?’ আমি ঝাঁপ দিতে চেয়েছিলাম, মাটিতে গড়াগড়ি দিতে চেয়েছিলাম, আমি যা করছিলাম তা করতে চাই। আমি কি সক্ষম হব, নাকি সীমাবদ্ধতা আছে? ডাক্তার বলেছিলেন চিন্তার কিছু নেই, আপনি নিজের মতো চলতে পারেন, পিছনের কথা ভুলে যান। এবং আজ আমি ঠিক তেমনই অনুভব করছি। আমি স্লাইড করতে, রোল করতে, আমি যা করতে চাই তা করতে পারি, লাফ দিতে পারি। আমি এগিয়ে যাব এবং আমি যা করতে পারি সেটা আমি করব।’