পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদি পহেলগাঁও সন্ত্রাসবাদী হামলার জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনীকে দোষারোপ করেছেন। এই ঘটনায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়েছিলেন। পাশাপাশি তিনি পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার প্রমাণও চেয়েছেন। এবং এই ঘটনার সঙ্গে যেভাবে পাকিস্তানকে যুক্ত করছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম, তারও তীব্র সমালোচনা করেছেন।
সামা টিভিতে আফ্রিদি বলেছেনন, ‘যদি ওখানে পটকাও ফাটে, তাতেও পাকিস্তানকেই ওরা (ভারত) দায়ী করবে।’ সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন, ‘কাশ্মীরে তোমাদের ৮ লক্ষ সৈন্য নিয়ে গঠিত একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী আছে এবং তার পরেও এই ঘটনা ঘটেছে। এর অর্থ হল তোমরা যদি জনগণকে নিরাপত্তা দিতে না পারো, তাহলে তোমরা অদক্ষ এবং অকর্মণ্য।’
সন্ত্রাসী হামলার ‘অর্থহীন’ কভারেজের করছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম, এমনই দাবি আফ্রিদির। তিনি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমেরও তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাঁর মতে, ‘এটা অবাক করার মতো যে, আক্রমণের এক ঘন্টার মধ্যেই ওদের (ভারতের) মিডিয়া বলিউডে পরিণত হয়ে যায়। ঈশ্বরের দোহাই, সব কিছুকে বলিউড বানাবেন না। আমি অবাক হয়েছিলাম, আসলে, আমি ওদের কথা বলার ধরণ উপভোগ করছিলাম। আমি বলছিলাম, ওদের চিন্তাভাবনা দেখুন, আর ওরা নিজেদেরকে শিক্ষিত মানুষ বলে দাবি করে।’
কোনও প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটারের নাম না নিয়ে, আফ্রিদি কোনও প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে দোষারোপ করার জন্য তাঁদের সমালোচনাও করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘দু' জন ক্রিকেটার আছেন, যাঁরা ভারতের হয়ে অনেক ক্রিকেট খেলেছেন। তাঁরা রাষ্ট্রদূত এবং শীর্ষ ক্রিকেটার ছিলেন, তবুও তাঁরা সরাসরি পাকিস্তানকে দোষারোপ করছেন।’ তাঁর সংযোজন, ‘ভাই পাকিস্তানই কেন? কোনও প্রমাণ তাহলে দেখাও।’
এদিকে পহেলগাঁও-এ ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলার জেরে এমনিতেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তীব্র অসন্তোষ দানা বেঁধেছে ভারতের। তার উপর আবার পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার সম্প্রতি বলেছেন, ‘যারা হামলা চালিয়েছে, তারা মুক্তিযোদ্ধা।’ এর পর ভারতের ক্ষোভ আরও বাড়ে। ভারত সরকার কড়া পদক্ষেপ করে। পাকিস্তানের সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করা হয়, বাতিল করা হয়েছে পাকিস্তানি নাগরিকদের দেওয়া সব ভিসা।
এদিকে রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘মন কী বাত’ অনুষ্ঠানে পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে ফের মুখ খুললেন। ২২ এপ্রিলের ঘটনার জন্য তিনি আরও একবার শোক প্রকাশ করেন এবং ভারতীয় জনগণের প্রতি নিজের সমবেদনা জানান। মোদী বলেন, ‘পহেলগাঁও-এর ঘটনা দেখেই প্রত্যেক ভারতীয়ের রক্ত ফুটছে। আমরা জঙ্গি হামলার কঠোর জবাব দেব।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘এই হামলা ভারতীয়দের মনকে নাড়া দিয়েছে এবং দেশের প্রত্যেক প্রান্ত থেকে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা রয়েছে।’