শেষ ১৮ বলে ৪৮ রান করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে দুর্দান্ত শতরান হাঁকালেন ডেভিড মিলার। যা আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরিও বটে। তাতে অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকার কোনও লাভ হল না। কারণ ৩৬৩ রান তাড়া করতে নেমে মিলার ছাড়া প্রোটিয়াদের আর কোনও ব্যাটারই সেরকমভাবে খেলতে পারেননি। ফলে ৫০ রানে হেরে গিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা ছিটকে গেল। সেইসঙ্গে টানা তিনটি বিশ্বকাপের নক-আউট পর্বে দলের হারের সাক্ষী থাকতে হল মিলারকে। ২০২৩ সালের একদিনের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে প্রোটিয়ারা যখন দাঁড়াতেই পারছিলেন না, তখন ১১৬ বলে ১০১ রান করেছিলেন। ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ১৭ বলে ২১ রান করে আউট হয়ে গিয়েছিলেন। আর এবার আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে ৬৭ বলে অপরাজিত ১০০ রান করলেন। কিন্তু আবারও হেরে গেল অস্ট্রেলিয়া।
৩৬ তম ওভারেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে প্রোটিয়ারা হারবে!
আর সেটা যে হবে, মোটামুটি ৩৬ ওভারের দিকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। মিলার ক্রিজে থাকলেও ৩৬ তম ওভারের শেষে ছয় উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলেন প্রোটিয়ারা। রান উঠেছিল মোটে ২০০ রান। অর্থাৎ জয়ের জন্য ৮৪ বলে ১৬৩ রান দরকার ছিল। মিলার যে নিজের ছন্দে পিটিয়ে খেলবেন, সেটার তেমনই সুযোগ পাননি। শুরুর দিকে তেম্বা বাভুমা এত ডট বল খেলেন যে কার্যত কিছু করার ছিল না মিলারের।
৪৭ ওভারের শেষে মিলারের স্কোর ছিল ৫২ রান!
তারপরও দলের সম্মান বাঁচাতে খেলা চালিয়ে যেতে থাকেন প্রোটিয়া তারকা। একদিকে মার্কো জানসেন, কেশব মহারাজরা ড্রেসিংরুমে ফিরে গেলেও হারের ব্যবধান যতটা কম করা যায়, সেই চেষ্টা করতে থাকেন। সেভাবেই ৪৭ ওভার শেষে মিলারের স্কোর দাঁড়ায় ৪৯ বলে ৫২ রান। আর প্রোটিয়াদের স্কোর ছিল নয় উইকেটে ২৬৪ রান। জয়ের জন্য ১৮ বলে ৯৯ রান দরকার ছিল। আর ওই ১৮টি বলই খেলেন মিলার। আর মেরে খেলতে থাকেন।
শেষ ১৮ বলের ১৮টিই খেলেন মিলার!
সেভাবে ৪৯ তম ওভারের শেষে মিলারের স্কোর দাঁড়ায় ৮২ রান। অর্থাৎ শতরানের জন্য শেষ ওভারে ১৮ রান দরকার ছিল প্রোটিয়া তারকার। সেই অবস্থায় প্রথম বলে চার মারেন। তৃতীয় বলে দু'রান নেন। চতুর্থ বলে চার মারেন। পঞ্চম বলে ছক্কা হাঁকান। আর ম্যাচের শেষ বলে (৯৯.৬ তম ওভার) দু'রান নিয়ে দুর্দান্ত শতরান পূরণ করেন। যে মুহূর্তটার জন্য যেন সকলে অপেক্ষা করছিলেন। শেষ ওভারটায় তো সকলে একটাই জিনিসের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। আর সেটা হল যে শতরান পূরণ হবে কিনা। আর সেই মাইলস্টোন ছুঁয়ে নিজের সদ্যোজাত সন্তানকে উৎসর্গ করেন প্রোটিয়া তারকা।