রোহিত শর্মা ও রবীন্দ্র জাদেজা তাদের প্রাক-টুর্নামেন্ট দলীয় ফটোশুটের পথে ভাবছিলেন, তারা আইসিসি বিশ্বকাপে কতবার খেলেছেন। রোহিত মনে করতে পারেন যে তিনি নয়টি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছেন, কিন্তু জাদেজার হিসেবের ঠিক নেই।
ছবির নির্দেশনা অনুযায়ী ক্রিকেটারদের প্রতিক্রিয়া জানানো নিয়ে স্বাভাবিক হাসি-মজার মুহূর্ত তৈরি হয়। বিসিসিআই-এর এক ভিডিয়োতে রোহিত জাদেজাকে বলেন, ‘সতেরোবার ডেকেছে আমাকে, এইসব করানোর জন্য!’ বিশ্ব টুর্নামেন্টের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য তাদের মন এতটাই প্রশিক্ষিত যে, এখন আর আবেগ স্বতঃস্ফূর্ত কি না, তা বোঝা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
দুবাইয়ে আইসিসির কোনও ইভেন্ট? তারা আগেও এমনটা দেখেছে। ভারত এখানে ছিল ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, যা কোভিডের কারণে সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ২০২০ আইপিএল ও ২০২১ আইপিএলের একটি অংশও এখানে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ২০১৪ সালে সাধারণ নির্বাচনের কারণে আইপিএলের একটি ধাপ সংযুক্ত আরব আমিরাতে স্থানান্তরিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন… বেন কারানের সেঞ্চুরি, আয়ারল্যান্ডকে ৯ উইকেটে উড়িয়ে, ২-১ ODI সিরিজ জিতল জিম্বাবোয়ে
দুবাই বিসিসিআই ও আইসিসির জন্য প্রধান ম্যাচ ভেন্যু হয়ে ওঠার অনেক আগেই এটি পাকিস্তানের ক্রিকেটের গৃহীত মাঠ ছিল। ২০১০-এর দশকে নিরাপত্তা সমস্যার কারণে পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধ হয়ে গেলে, তারা এখানেই তাদের ম্যাচগুলো আয়োজন করত। তবুও, এটি যেন একটা সাময়িক ব্যবস্থা ছিল। পাকিস্তান তাদের হোম টেস্ট ম্যাচ খেলত ফাঁকা গ্যালারির সামনে।
দুবাই ক্রিকেট-পাগল শহর নয়। এটি এক্সপ্যাটদের বাণিজ্যিক কেন্দ্র। এখানে সবচেয়ে বেশি ভারতীয়দের বসবাস, এরপরই পাকিস্তানিদের সংখ্যা বেশি। ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচ হলে তারা একত্রিত হয়, যা বিশাল আকর্ষণের সৃষ্টি করে। তবে ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রমাণ হয়েছিল, এটি সত্যিকারের আন্তর্জাতিক আয়োজনের জন্য যথেষ্ট নয়।
আরও পড়ুন… ENG vs IND Test: ভারতীয় দলে জায়গা পাকা করতে County Championship-এর এসেক্সে নাম লেখালেন শার্দুল ঠাকুর
মঙ্গলবার ভোরবেলা দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছিল ব্যস্ত। পরিবাহক বেল্টগুলো বোঝাই ছিল লাগেজে। কেউ এসেছে ব্যবসার চুক্তি করতে, কেউ এসেছে ডেভিড গ্রে কনসার্ট দেখতে, কেউ বা এসেছে বুর্জ খলিফা দেখতে। কারও মাথায় ক্রিকেট নেই।
কিন্তু দুবাই স্পোর্টস সিটিতে ঢুকলেই বোঝা যায়, আইসিসির চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এখানে আয়োজিত হতে চলেছে। ‘রিং অব ফায়ার’-এর ঝলমলে এলইডি লাইট, আধুনিক সুবিধা, ও সবুজ মাঠ – এগুলোই এটিকে টেলিভিশনে দেখার জন্য আকর্ষণীয় করে তোলে।
এই আট দলের টুর্নামেন্টে দুবাই পর্ব হবে গুরুত্বপূর্ণ। যদিও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড এখানে টিকিট বিক্রির আয় পাবে, তবুও এটিকে পাকিস্তানের সত্যিকারের ‘হোম’ বলা কঠিন।
আরও পড়ুন… Champions Trophy 2025: ভারতীয় নেটে পাক ভূমির বাঁহাতি পেসার! শাহিনকে আটকাতে রোহিত-বিরাটদের বড় উদ্যোগ
ভারত নিরাপত্তার কারণে পাকিস্তানে সফর করে না। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ১৫টি ম্যাচের মধ্যে কমপক্ষে তিনটি ম্যাচ হবে দুবাইয়ে, যার মধ্যে একটি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। এই ম্যাচগুলো ১০ দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে, আর বাকি টুর্নামেন্ট করাচি, লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডিতে চলবে। নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশও দুবাইয়ে এসে ভারতের বিরুদ্ধে খেলবে। যদি ভারত সেমিফাইনালে পৌঁছে যায়, তবে একটি সেমিফাইনাল এবং ফাইনালও দুবাইতে অনুষ্ঠিত হবে।
দুবাইয়ের ম্যাচগুলো যেন ‘টুর্নামেন্টের ভেতর আরেকটি টুর্নামেন্ট’, যেখানে ভারত অংশ নেবে, যদিও ইভেন্টের আয়োজক পাকিস্তান। ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপেও আমরা দেখেছিলাম, ভারত বিভিন্ন শহরে সফর করেছিল, আর পাকিস্তান তাদের পছন্দমতো কয়েকটি শহরে খেলেছিল।