গতকাল রাত্রিতে লাল খামের ঘটনাটি এক অদ্ভুত মোর নেয় যখন এয়ারপোর্টের লাউঞ্জে থাকা এক ব্যক্তিকে দেওয়া একটি রহস্যজনক লাল রংয়ের খাম সে সকলের সামনে খেয়ে তার চারিপাশে থাকা লোকেদের হতভম্বিত করে তোলে, এরফলে খাম নিয়ে যে রহস্যের জল্পনা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে তা আরও ঘনীভূত হয়ে উঠেছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত যাত্রীদের মতে, লাউঞ্জের সুরক্ষা কর্মীরা সেই লোকটিকে - সোনালী রঙের সিল দেওয়া লাল রঙের খামটি যিনি গ্রহণ করেছিলেন - ওই খামের মধ্যে কী ছিল তা জিজ্ঞাসা করেছিলেন। সেটির মধ্যে যা ছিল তা লুকানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে, লোকটি খামটি ছিড়ে ফেলে এবং আস্তে আস্তে সেটির টুকরোগুলো খেয়ে নেয়, যা দেখে চারিপাশের লোকেরা হতভম্বিত হয়ে যায়। ওই কাগজের সাথেই ওই খামের মধ্যে থাকা বিষয়বস্তুও চিরবিলিন হয়ে যায় এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা সেটির সম্পর্কে কিছুই জানতে পারেনা।
এই অদ্ভুত কাজের ভিডিও ইনস্টাগ্রাম ও এক্স-এ (যা আগে টুইটার নামে পরিচিত ছিল) তাড়াতাড়ি ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল, যা এই ষড়যন্ত্রে আরও ইন্ধন যোগায়।
গত কয়েকদিন ধরে যে সকল রহস্যজনক ঘটনাগুলি ঘটছে এই ঘটনাটি সেগুলিরই অনুরূপ সেখানে দেখা গিয়েছিল যে একজন মার্জিত লাল রঙের পোশাক পরিহিত মহিলা এয়ারপোর্টের লাউঞ্জগুলিতে থাকা বেছে নেওয়া কিছু বিজনেস পর্যটকদের এইরকমই লাল রঙের খাম বিতরণ করছিল। প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রেই ওই মহিলা গ্রহণকারীদের কাছে এগিয়ে গিয়েছিল, তাদের খামটি দিয়েছিল এবং নির্বিঘ্নে কারোর দিকে না তাকিয়েই সেখান থেকে প্রস্থান করে গিয়েছিল। সেই খামগুলি পাওয়ার পর ওই গ্রহণকারী ব্যক্তিদের অস্বস্তিতে পড়তে দেখা গিয়েছিল, কেউ কেউ আবার তাড়াতাড়ি ওই লাউঞ্চ ছেড়ে চলে গিয়েছিল।
এই ক্রমবর্ধমান রহস্যের অন্যতম আশ্চর্যজনক বিষয় হলো এই খামগুলির মধ্যে যে কিউআর কোডগুলি রয়েছে সেগুলি ধরন। অনেক যাত্রীরা জানিয়েছেন যে তারা যখন ওই কোডগুলি স্ক্যান করতে গিয়েছিল, এগুলি হাওয়ায় বিলিন হয়ে যায়। এই জাতীয় রিপোর্টগুলির কারণে সমাজ মাধ্যমে এটিকে ঘিরে ভিত্তিহীন জল্পনা গড়ে ওঠে, এমনও খবর শোনা যায় যাচ্ছে যে এগুলি বিভিন্ন অপারেশন করার জন্য সিক্রেট সোসাইটির পাঠানো বিভিন্ন সংকেত এবং এমনও শোনা যাচ্ছে যে সম্ভবত এগুলির মাধ্যমে ইউরোপীয় রাজকীয় নিদর্শনের সাথে যুক্ত গুপ্তধনের সন্ধান করা হচ্ছে।
বিভিন্ন তত্ত্ব ও জল্পনা
এই রহস্য সামনে আসার পর থেকেই, ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় আরও বিভিন্ন রকমের কথা শুনতে পাওয়া যাচ্ছে, যা আগুনে ঘি ঢালার কাজ করছে। সমাজ মাধ্যম রেড এনভেলপ সোসাইটির সম্পর্কে বিভিন্ন রকমের তত্ত্বে ভরে রয়েছে। কেউ মনে করছেন যে এটি বিনিয়োগকারীদের একটি এলিট গ্রুপ, আবার কেউ মনে করছেন হয়তো এটির সাথে গোয়েন্দা সংস্থাগুলির বা আন্ডারগ্রাউন্ড নেটওয়ার্কের যোগসূত্র রয়েছে। তবে এই সকল দাবির কোনো অনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনাটি - যেখানে কোনো নিরাপত্তাকর্মী বা যাত্রী খামটি পরীক্ষা করার আগেই নষ্ট করে দেওয়া হয়ছে - এই অনিশ্চয়তাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। লাউঞ্জের কর্মীরা জানিয়েছেন যে লোকটি মূলত প্রচন্ড ভয় পেয়ে গিয়ে খামটি খেয়ে নেয়, এই কারণেও তার এই কাজকে ঘিরে বিভিন্ন রহস্য জাল বুনেছে। রহস্যজনক লাল খামগুলির মতোনই এই লোকটির পরিচয়ও অজানা থেকে গেছে।
এরপর কী হতে চলেছে?
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনাটি, বিষয়টিকে ঘিরে আরও কৌতুক জাগিয়ে তোলায়, এরপর কী হতে চলেছে তা নিয়ে ইন্টারনেটে বিভিন্ন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তদন্তকারীরা এবং ইন্টারনেট গোয়েন্দারা বিষয়টির ওপর নিবিড় পর্যবেক্ষণ বজায় রেখেছে, তারা বিভিন্ন সূত্রের আরও উন্মোচন করতে চায়। জনগণ পরবর্তী সংবাদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষারত থাকায়, লাল খামের রহস্যটি ভারতবর্ষের সবথেকে বেশি ভাইরাল বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
এই খামগুলির মূল উদ্দেশ্য এখনো অধরা থাকলেও একটা বিষয়ে স্পষ্ট যে: এটি কোনো সাধারণ মার্কেটিংয়ের কৌশল নয়। কর্তৃপক্ষ আরও স্পষ্টীকরণ না দেওয়া পর্যন্ত, রেড এনভেলপ সোসাইটি-কে ঘিরে আরও কৌতুহল বাড়তেই থাকবে।
পাঠকদের জন্য নোট: এই প্রবন্ধটি রেড এনভেলপ সোসাইটির সাথে যোগাযোগের পর দ্বারা লেখা হয়েছে।