কার্যত হারতে হারতে জিতে গিয়েছে আসনটি। আরামবাগ আসনে ৬ হাজার ৩৯৯ ভোটে জিতে গিয়েছেন। এদিকে তৃণমূলের একাংশও এই আসনটি কার্যত হারের খাতায় লিখে রেখেছিলেন। গতবারে এই আসন মাত্র ১১৪২ ভোটে হাতছাড়া হয়েছিল বিজেপির। এবার এই আসনকে ছিনিয়ে নিতে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বিজেপি। অন্যদিকে তৃণমূলের দ্বন্দ্বের কাঁটাও ছিল পুরোদমে। কিন্তু শেষ হাসি হাসল ঘাসফুলই।
আর জেতার পরে কেঁদে ফেললেন তৃণমূলের বিজয়ী প্রার্থী মিতালি বাগ। আসলে এই কান্না জয়ের কান্না। আনন্দে, আবেগে কেঁদে ফেলেন তিনি। চোখে জল। এই কান্না আনন্দের।
আসলে এই আসনটিতে জেতা যাবে না এটা একরকম ধরেই নিয়েছিল তৃণমূল। তার উপর আরামবাগ তৃণমূলের অন্দরে নানা রকমে দ্বন্দ্বের মেঘ ঘনাচ্ছিল। এদিকে এবার প্রার্থী পদ পাননি অপরূপা পোদ্দার। তাঁর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল তৃণমূলের একাংশ।
মিতালি জিতেছেন ৬ হাজার ৩৯৯ ভোটে। কেঁদে ফেলেন মিতালি। তিনি বলেন, মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার মতো তৃণমূল স্তরের কর্মীকে যে সুযোগ করে দিয়েছেন তার জন্য় আমি কৃতজ্ঞ। মুখ্য়মন্ত্রীর উপর মানুষের ভালোবাসাই আমার জয় এনে দিয়েছে।
এদিকে গতবার কোনওরকমে জিতেছিল তৃণমূল। এনিয়ে নানা সন্দেহ ছিল বিজেপির অন্দরে। তবে এবার সেই অপরূপা টিকিট পাননি। তবে এবারও তৃণমূলের এই ফলাফলকে মানতে পারছেন না বিজেপি নেতৃত্ব। তারা ফের গণনার দাবি করেছেন।
আসলে সেই ২০১৯ সালের পর থেকে বিজেপি আরামবাগে সংগঠনকে মজবুত করতে শুরু করেছিল। সেই মতো দলীয় নেতা কর্মীরাও সক্রিয় ছিলেন। সেই জায়গায় মালতী ছিলেন একেবারে তৃণমূলস্তর থেকে উঠে আসা মহিলা। কিন্তু সবুজ ঝড়ে এগিয়ে গেলেন তিনিও।
এদিকে এবার প্রথম থেকেই আরামবাগকে পাখির চোখ করেছিল বিজেপি। কর্মীরা পরিশ্রমও কিছু কম করেনি। হিসাব করে নেমেছিল বিজেপি। অপরূপা পোদ্দার এখানে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জিতেছিলেন মাত্র ১১৪২ ভোটে। নির্বাচন কমিশনের হিসেবে, গোটা রাজ্যে সর্বনিম্ন ব্যবধানে জয় এই আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্র। তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী পেয়েছিলেন ৬ লক্ষ ৪৯ হাজার ৯২৯টি ভোট (৪৪.১৫%)। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী তপন রায়ের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৬ লক্ষ ৪৮ হাজার ৭৮৭ (৪৪.০৮%)। এই অঙ্ক থেকেই এবার টার্গেট করা হয়েছিল আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রকে। কিন্তু শেষ হাসি হাসলেন মিতালি। বলা ভালো কাঁদলেন। আনন্দের কান্না।