কলকাতার একটা বড় অংশের ধার বরাবর রয়েছে গঙ্গার পাড়। কিন্তু কিছু জায়গায় গঙ্গার পাড়ের ভাঙন ভাবাচ্ছে সরকারকে। এবার সেই নিরিখেই গঙ্গার পাড় কতটা শক্তপোক্ত সেটা জানার চেষ্টা করছে সরকার। এজন্য শুরু হবে সমীক্ষা। কলকাতা, হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি শিল্পাঞ্চলে গঙ্গার পাড় কতটা শক্তপোক্ত রয়েছে সেটা সমীক্ষা করে দেখা হবে। মূলত জলের তোড়ে যদি আগামী দিনে গঙ্গার পাড় ভেঙে জল মূল শহরে ঢুকে পড়ে তাহলে বড় বিপদ হতে পারে। সেকারণে পাড়ের প্রকৃতি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করা হবে। সেই মতো বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নেওয়া হবে। সেই পাড়কে কীভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা যায় সেটা দেখা হবে।
কলকাতার ধার বরাবর গঙ্গা নদী। তবে শুধু কলকাতা ভিত্তিক সমীক্ষা হবে এমনটা নয়। মূলত যেটা করা হবে হুগলির ত্রিবেণী থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের গেঁওখালি পর্যন্ত গঙ্গার পাড়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করা হবে। কোথাও গঙ্গার পাড় ভাঙছে কি না, কোথাও জনপদের কাছে গঙ্গা এগিয়ে আসছে কি না সবটাই দেখা হবে এই সমীক্ষায়।
সেই সঙ্গেই আগামী দিনে গঙ্গা উপচে যদি জনপদের মধ্য়ে চলে আসে তাহলে বড় বিপদ। সেকারণে সবটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশ্বব্যাঙ্কের ঋণের টাকায় এই কাজ করা হবে বলে খবর। তবে শুধু গঙ্গা নদী নয়, গঙ্গা নদী সংলগ্ন আরও যে খাল, শাখা নদীগুলি রয়েছে তার কোনটার কী পরিস্থিতি সেটা খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে এর আগে জুন মাসে গঙ্গা-তিস্তার জলবন্টন চুক্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী। তিনি লিখেছিলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ( তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সম্প্রতি ভারত সফরে এসেছিলেন সেই প্রসঙ্গে আপনাকে লিখছি। মনে হচ্ছে গঙ্গা ও তিস্তার জলবণ্টন নিয়ে আলোচনা হয়েছে আপনাদের মধ্য়ে। কিন্তু রাজ্য় সরকারকে না জানিয়ে এই ধরনের আলোচনা প্রত্যাশিত নয়, ও সেটা গ্রহণযোগ্য নয়।’
‘আমাদের সঙ্গে বাংলাদেশের একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ভৌগলিকগতভাবে এই সম্পর্ক। সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকেও এই সম্পর্ক। আমি বাংলাদেশের মানুষকে শ্রদ্ধা করি, ভালোবাসি।’ এরপর ছিটমহল বিনিময় চুক্তির কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
এরপর তিনি লিখেছেন ‘জল অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ। এটা মানুষের লাইফলাইন। এই সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে আমরা আপোস করতে পারি না। এই ধরনের চুক্তি হলে বাংলার মানুষ সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ’
‘আমি বুঝতে পারছি ভারত সরকার ইন্দো বাংলাদেশে ফরাক্কা চুক্তি( ১৯৯৬) পর্যালোচনা করতে চাইছে। এটা ২০২৬ সালে মেয়াদ শেষ হবে। কিন্তু আপনারা জানেন যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে জলবণ্টন সংক্রান্ত ব্যাপার। তবে এটার উপর বাংলার মানুষের জীবনযাত্রা নির্ভর করে, কলকাতা পোর্টের নাব্যতার ব্যাপার রয়েছে। ’
‘আমি বলতে চাইছে নদী সংক্রান্ত ধারা অনেকটা বদলে গিয়েছে। যার প্রভাব পড়ছে বাংলার উপরেও। জলঙ্গি আর মাথাভাঙা পদ্মা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। সুন্দরবনে ফ্রেশ জল যাওয়া কমে গিয়েছে।’