২০১১ সাল থেকে বাংলায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল বেড়েছে। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র নতুনভাবে গড়ে উঠেছে। শহর থেকে গ্রামবাংলা চিকিৎসা ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। আলাদা আলাদা বিভাগ থেকে শুরু করে উন্নত ও আধুনিক মানের প্রযুক্তি গড়ে তোলা হয়েছে। এমনকী রাজ্যের মানুষের হাতে ৫ লাখ টাকার মেডিক্লেম হিসাবে তুলে দেওয়া হয়েছে ‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ড’। এসব ঘটেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের আমলে। আর তার শংসাপত্র মিলেছে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকেও। বৃহস্পতিবার নিউটাউনে ১ হাজার ১০০ শয্যার বেসরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের শিলান্যাস করার পাশাপাশি উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ নিউটাউনে নারায়ণা হেলথ্ সিটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে মানবিকতার পাঠ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী তিনি কেন সব ধর্মকে ভালবাসেন এবং শ্রদ্ধা করেন তার কারণও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে এই বেসরকারি সংস্থাকে কথা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারা যদি বাংলায় হাসপাতাল ব্যবসায় লগ্নি করে তাহলে তার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে তিনি নিজে উপস্থিত থাকবেন। বেসরকারি হাসপাতালও কথা রেখেছে। মুখ্যমন্ত্রীও কথা রাখলেন। এখানে এসে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই হাসপাতালে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। দুটি দফায় হাসপাতালের শিলান্যাস হবে। প্রথম দফায় ৫০০ এবং দ্বিতীয় দফায় ৬০০ শয্যা। ক্যানসারের চিকিৎসা এবং হার্ট অপারেশনের বন্দোবস্ত থাকবে। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের বন্দোবস্তও থাকবে। এখানে কমপক্ষে ১০ হাজার কর্মসংস্থান হবে।’
আরও পড়ুন: ‘হাইকোর্টের নজরদারি না থাকলে সার্কিট বেঞ্চও নীল–সাদা করতেন’, রাজ্যকে প্রধান বিচারপতি
অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীকে বিজেপি নেতারা মুসলিমপন্থী বলে মনে করেন। এমনকী তাঁর সঙ্গে জঙ্গিযোগ আছে বলে বিজেপি নেতারা দাবি করেছেন। যার জবাব বিধানসভায় দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর আজ সব ধর্মকে ভালবাসার কারণ উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘রাজ্যে একজনের পোলিও ধরা পড়ায় ভারতকে ‘ব্ল্যাক লিস্টেড’ করা হয়েছিল। তার থেকে বেরিয়ে আসতে আমাকে সাহায্য করেছিলেন ইমাম, মোয়াজ্জেম, পুরোহিতরা। দেশের সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একসঙ্গে কাজ করলে উপকার হয়। জেলায় জেলায় মেডিক্যাল কলেজ এবং শিশুদের চিকিৎসার জন্য কী ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারও চিন্তাভাবনা স্বচ্ছ হলেই মানুষের উপকারের জন্য কাজ করা যায়। রাজ্যে ১৪টি নতুন মেডিক্যাল কলেজ হয়েছে।’
এছাড়া একাধিক জাতি এবং ভাষাভাষীর দেশে সব ধর্মের মানুষের একসঙ্গে থাকার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে উন্নয়নের পরিসংখ্যান তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘রাজ্যে ১৪টি নতুন মেডিক্যাল কলেজ হয়েছে। ৪২টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল রয়েছে। ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট আগে জেলায় থাকত না। এসএনসিইউ আগে ৬টি ছিল। আমরা ৭১টি করেছি। ১৩ হাজার ৩৯২ স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি করেছি। ১১৭টি ন্য়ায্য মূল্যের ওষুধের দোকান খোলা হয়েছে। বিনামূল্যে চিকিৎসা দিই। ওষুধের ব্যবস্থা করি। আমাদের স্বাস্থ্যসাথী ৯ কোটি মানুষ পান। পরিবারের মহিলা সদস্যের নামে দেওয়া হয় স্বাস্থ্যসাথী। যাঁরা বলেন যে এখানে ব্যবসায় বিনিয়োগ হবে না। বেঙ্গল বিজনেস গ্লোবাল সামিট করে কোনও লাভ নেই তাঁরা এসে দেখা যান। আমাকে মাত্র ১৫ দিন আগে দেবী শেঠি এই হাসপাতাল করার কথা বলেন। আজকে তার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হচ্ছে। যাঁরা সমালোচনা করেন এটা তাঁদের জন্য আই ওপেনার।’