বউবাজারে মেট্রোর সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ের জন্য যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তুলছেন বিরোধীরা, তখন বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন তাঁর দলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়। রবিবার সংবাদমাধ্যমকে সৌগতবাবু বলেন, ‘কয়েকটা বাড়ি ভেঙে পড়লে প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া যায় না।’ বর্ষীয়ান সাংসদের এহেন মন্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।পেশায় পদার্থবিদ্যার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সৌগতবাবু। তাঁর দাদা তথাগত রায় প্রথিতযশা বাস্তুকার। দমদম – দক্ষিণেশ্বর মেট্রো নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তথাগতবাবুর। যদিও রাজনৈতিকভাবে ২ ভাই ২ মেরুতে। এহেন সৌগতবাবু রবিবার বলেন, ‘কয়েকটা বাড়ি ভেঙে পড়লে, প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া যায় না। কোথাও বড় প্রকল্প হলে কিছু কিছু সমস্যা হয়। কোথাও প্রযুক্তিগত ত্রুটি থাকতে পারে। আমি আশাবাদী মেট্রো সমস্যার সমাধান করবে।’ওদিকে মেট্রো বিপর্যয়ের জন্য লাগাতার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করছে বিরোধীরা। বাম থেকে বিজেপি আক্রমণের কেন্দ্রে মমতার রুট বদলের সিদ্ধান্ত। রবিবার সেই তালিকায় নাম লিখিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীও। তিনি বলেন, ‘রেলমন্ত্রী থাকাকালীন দক্ষিণ কলকাতার কিছু প্রোমোটারকে খুশি করার জন্য ইস্ট – ওয়েস্ট মেট্রোর নকশা বদল করেছিলেন উনি।’বলে রাখি, মাস্টার প্ল্যান অনুসারে ইস্ট – ওয়েস্ট মেট্রো শিয়ালদা থেকে সেন্ট্রাল – মহাকরণ হয়ে হাওড়া ময়দান যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মমতা মেট্রোর রুট শিয়ালদা থেকে ধর্মতলায় নিয়ে যেতে বাধ্য করেন। এজন্য মেট্রোর কাজ শুরু করতে অনেক দেরি হয়ে যায়। সঙ্গে খরচ হয় বাড়তি ৭০০ কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, সাধারণত মাটির তলায় মেট্রোর পর কোনও বসতির নীচ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় না। মেট্রোর সুড়ঙ্গ যায় রাস্তার নীচ দিয়ে। যেমন উত্তর – দক্ষিণ মেট্রোর পথ গিয়েছে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, জওহরলাল নেহেরু রোড ও আশুতোষ মুখোপাধ্যায় রোডের নীচ দিয়ে। কিন্তু মমতার আবদার মেনে মেট্রোকে শিয়ালদা থেকে ধর্মতলা নিয়ে যেতে বসতি এলাকার নীচে সুড়ঙ্গ তৈরি করতে বাধ্য হয়েছেন ইঞ্জিনিয়াররা। শিয়ালদার ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া মোড় থেকে বউবাজারে বসতি এলাকার নীচে ঢুকেছে মেট্রোর সুড়ঙ্গ। আর সেখানেই যত বিপত্তি।