আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে রাজ্যজুড়ে পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এখন এই নারকীয় ঘটনার বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাতে বিপাকে পড়ছেন রোগীরা। এই আবহে সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন মানছেন না চিকিৎসকরা এবং কর্মবিরতি পালন করছেন। অবিলম্বে তাঁদের কাজে ফিরতে নির্দেশ দিক আদালত। এবার এই আর্জি নিয়ে চিকিৎসক কুনাল সাহা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন। মামলা দায়ের করতে অনুমতি দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। আজ, সোমবার মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
এই ধর্ষণ–খুনের ঘটনার পর গর্জে উঠেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি ‘এনকাউন্টার’ করার নিদান দিয়েছিলেন তিনি। তারপর যখন আরজি কর হাসপাতাল ভাঙচুর হয় তখন এক্স হ্যান্ডেলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। আর কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে ফোন করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন। তবে এই ঘটনা নিয়ে জুনিয়র এবং সিনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে প্রান্তিক রোগীরা হাসপাতালে এসে চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। একবার কলকাতা হাইকোর্ট চিকিৎসকদের কাজে ফেরার অনুরোধ করেছিল। উলটে রাতের শহর দখলে নামার দিনই আরজি কর হাসপাতালে ভাঙচুর হয়।
আরও পড়ুন: ‘উত্তরপ্রদেশের মতো পশ্চিমবঙ্গেও চালু হোক এনকাউন্টার’, আরজি করের ঘটনায় সরব সুমন
এই ঘটনার প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে রাস্তায় নেমেছিলেন। দোষীর ফাঁসি চাই স্লোগান তুলেছিলেন। আর আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় আন্দোলনকে সমর্থন করেও কাজে ফিরতে অনুরোধ করেছিলেন চিকিৎসকদের। তারপরও লাভ হয়নি। কিছু সিনিয়র চিকিৎসক কাজে যোগ দিলেও জুনিয়র ডাক্তাররা অনড়। ফলে আরজি কর হাসপাতাল, এসএসকেএম, কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে রোগী নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন পরিজনরা। চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলেই এই ছবি ধরা পড়ছে। গরিব প্রান্তিক রোগীরা এখন ভরসা করছেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে। তা দিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
যদিও পাঁচদিন হয়ে গেলেও সিবিআই তদন্ত এখন প্রশ্নের মুখে। কারণ কোনও গ্রেফতার হয়নি। বড় কোনও তথ্যপ্রমাণও সামনে নিয়ে আসতে পারেনি তদন্তকারীরা। এতে এখন পরিস্থিতি জটিল হতে পারে। দেশের অন্যতম বৃহৎ চিকিৎসক সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন শনিবার ২৪ ঘণ্টার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল। তার জেরে বহির্বিভাগের পরিষেবা এবং পূর্বনির্ধারিত সমস্ত অস্ত্রোপচার বন্ধ ছিল। যার প্রভাব পড়ে দেশজুড়ে। কেন্দ্রীয় সরকারও অনুরোধ করেছিল চিকিৎসকদের কাজে ফিরতে। তাতেও কোনও ফল হয়নি। এবার চিকিৎসকদের কাজে ফেরাতে মামলা করতে হচ্ছে এক চিকিৎসককেই।