কুমারটুলি ঘাটে ট্রলি ব্যাগে প্রৌঢ়ার খণ্ডিত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় সামনে এল আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য। সূত্রের দাবি, খুনের পর সুমিতা ঘোষের দেহ খণ্ড করা থেকে শুরু করে, সেই দেহ ট্রলি ব্যাগে ভরা কিংবা পাচার করার জন্য রিকশা ডাকা - এই পুরো পর্বে কোনও এক 'তৃতীয় ব্যক্তি' অভিযুক্ত ফাল্গুনী ঘোষ ও তাঁর মা আরতি ঘোষকে 'সাহায্য়' করেছিলেন!
প্রশ্ন অনেক:
প্রশ্ন হল - কে সেই ব্যক্তি? কী তাঁর পরিচয়? ফাল্গুনী ও আরতির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কী? তিনি কি এই পুরো ঘটনার সঙ্গেই যুক্ত, নাকি শুধুই সাহায্যকারী, নাকি তিনি খুনের সাক্ষী? এমনই বহু প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা।
কী বলছেন রিকশাচালক?
গত মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) সকালে কলকাতার কুমারটুলি ঘাটে নিহত সুমিতার ট্রলিবন্দি দেহ গঙ্গায় ফেলতে এসে হাতেনাতে ধরা পড়ে যান ফাল্গুনী ও আরতি।
ঘটনা হল - (এখনও পর্যন্ত যত দূর জানা গিয়েছে) মধ্যমগ্রামের ভাড়া বাড়িতে সুমিতাকে খুন করার পর তাঁর দেহ ট্রলিতে ভরে কুমারটুলির ঘাট পর্যন্ত পৌঁছতে মা-মেয়েকে রিকশা ও ট্যাক্সি ভাড়া করতে হয়েছিল। কিন্তু, ওই ভ্যান রিকশা তাঁরা নিজেরা ভাড়া করেননি।
ওই রিকশার চালক জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার সকালে এক ব্যক্তি (পুরুষ) তাঁর কাছে এসেছিলেন। তাঁর বয়স - আনুমানিক ৪০ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে। তাঁর পরনে ছিল সাদা রঙের জামা ও ট্রাউজার।
তিনি ওই রিকশার চালককে বলেছিলেন, ফাল্গুনীদের বাড়িতে চলে যেতে। সেখান থেকেই দুই মহিলা ভাড়ায় তাঁর ভ্য়ান রিকশায় উঠবেন। এবং ওই দুই মহিলাই তাঁর ভাড়ার টাকা মিটিয়ে দেবেন।
রিকশা চালকের আরও দাবি, তিনি ওই পাড়ায় বহু দিন ধরে রিকশা চালাচ্ছেন। কিন্তু, যে ব্যক্তি সেদিন সকালে তাঁর কাছে এসেছিলেন, তাঁকে তিনি চেনেন না।
প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি ওই ব্যক্তি বাইরের লোক? প্রসঙ্গত, এর আগে একাধিক সংবাদমাধ্যমে ফাল্গুনীদের প্রতিবেশীদের উদ্ধৃত করে দাবি করা হয়েছিল, আরতি-ফাল্গুনীর ঘরে নাকি বাইরের লোক আসত! তাহলে 'সাদা জামা' কি তেমনই কোনও একজন?
কী বলছেন প্রতিবেশীরা?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ এই প্রসঙ্গে দাবি করছেন, পাড়ার কারও সঙ্গেই ফাল্গুনীদের মেলামেশা ছিল না। তাই পাড়ার কেউ যে সেদিন রিকশা ডাকেননি, এই বিষয়ে তাঁরা এক প্রকার নিশ্চিত।
আবার, প্রতিবেশীদের কেউ কেউ দাবি করছেন, ওই 'সাদা জামা' নাকি আদতে মাঝেমধ্যেই আরতি ও ফাল্গুনীর ভাড়া বাড়িতে আসতেন। এবং তাঁর সঙ্গে নাকি ফাল্গুনীর খুবই ঘনিষ্ঠতা ছিল! এমনকী, তিনি নাকি ফাল্গুনীর 'প্রেমিক'ও হতে পারেন, সংবাদমাধ্যমের একটা সূত্রে এমন দাবিও উঠে এসেছে। যদিও এই সমস্ত দাবির সত্যাসত্যই তদন্তসাপেক্ষ।
ফাল্গুনী-আরতি কী বলছেন?
সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ওই 'সাদা জামা'কে নিয়ে পুলিশের কাছে বিস্তারিতভাবে কিছু বলেননি এই ঘটনায় অভিযুক্ত ও ধৃত মা-মেয়ে। কিন্তু, পুলিশ ইতিমধ্যেই এলাকার বিভিন্ন সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেছে। কথা হচ্ছে বিভিন্ন জনের সঙ্গে।
পাশাপাশি, অন্য সমস্ত সূত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে যদি সত্যিই তৃতীয় কোনও ব্যক্তি ফাল্গুনী ও আরতির 'পার্টনার ইন ক্রাইম' হন, তাহলে তাঁর হদিশও শীঘ্রই পাওয়া যাবে বলে আশা সংশ্লিষ্ট মহলের।