
Baji
৳7,777 IPL 2025 Sports Bonus
প্রদেশ কংগ্রেসের রাজনীতিতে একটি অধ্যায়ের অবসান হল। দক্ষিণ কলকাতায় এক নার্সিং হোমে বুধবার গভীর রাতে প্রয়াত হলেন সোমেন মিত্র। বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
অসুস্থতার কারণে ২১ জুলাই তিনি নার্সিংহোমে ভর্তি হন। পুরনো পেসমেকার বদলের জন্য বেলভিউ নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেশি থাকায়, সমস্যা তৈরি হয়েছিল। এ জন্য ডায়ালিসিস করতে হচ্ছিল। মঙ্গলবার অবশ্য রাত থেকে তাঁর অবস্থার ক্রমে উন্নতি হয়। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পরিবার সূত্রে জানানো হয়, বুধবার নার্সিংহোমে তিনি হাঁটাচলা করেন। পরিজনদের সঙ্গে কথাও বলেন। কিন্তু বুধবার গভীর রাতে তিনি হঠাৎই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন। রাতেই প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে ট্যুইট করে তাঁর প্রয়াণের খবর জানানো হয়।
বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাস প্রদেশ কংগ্রেস প্রধান সোমেন মিত্রকে মনে রাখবে দলের বিভাজন রোধ করতে ব্যর্থ হওয়া এক নেতা হিসেবে। নব্বইয়ের দশকে তৎকালীন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের সঙ্গে কংগ্রেসের সাংগঠনিক নির্বাচনে লড়াইয়ের পরেই দল ছাড়েন তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জন্ম নেয় তৃণমূল কংগ্রেস।
এ ভাবেই মহাশক্তিধর বাম দুর্গে ফাটল ধরানোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ব্যাটন কংগ্রেসের হাত থেকে চলে আসে মমতার নেতৃত্বাধীন নবীন ঘাসফুল শিবিরের হাতে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলার বুকে ক্রমে গুরুত্ব হারাতে থাকে শতাব্দীপ্রাচীন কংগ্রেস। নির্বাচনে বিপর্যয়ের দায় নিয়ে, ১৯৯৮ সালে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান সোমেন মিত্রও।
পরে মমতার ডাকে সাড়া দিয়ে তৃণমূলে যোগ দিলেও সে অভিযান বিশেষ সুখকর হয়নি কোনও পক্ষের কাছেই। প্রায় দুই দশক পর ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি ফের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদে ফেরেন। আমৃত্যু সেই দায়িত্বেই ছিলেন ছোড়দা।
১৯৪১ সােলর ৩১ ডিসেম্বর অবিভক্ত বাংলার যশোর জেলায় জন্ম সোমেন মিত্রর। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। ষাটের দশকের অস্থির পরিস্থিতিতে ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে রাজনীতিতে তাঁর হাতেখড়ি। ১৯৬৭ সালে ছাত্রনেতা হিসেবে অভিষেকের পরে তৎকালীন যুক্তফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে তাঁর বাগ্মীতা ও সাংগঠনিক দক্ষতার জোরে দ্রুত জনপ্রিয় বিরোধী মুখ হয়ে ওঠেন তিনি।
তাঁকে বরকত গনিখান চৌধুরীর শিষ্য বলা হত। আমহার্স্ট স্ট্রিটের ‘ছোড়দা’ নামেই অবশ্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিলেন। ক্লাব আর পুজো। এই দুটোই ছিল সোমেনবাবুর সংগঠন তৈরির মূলমন্ত্র।
২০০৭-’০৮ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তিনি প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেস গঠন করেন। পরে যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে। ২০০৯ সালে ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের সাংসদ হয়েছিলেন। তবে, পাঁচ বছর পূরণ হওয়ার আগেই ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে তিনি কংগ্রেসে ফিরে আসেন।
কংগ্রেস রাজনীতিতে তথা বাংলার রাজনীতিতে পাঁচ দশকব্যাপী সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সাদা জামা আর সাদা চপ্পলে উজ্জ্বল উপস্থিতির এই কংগ্রেস নেতার অবদান কখনই ভোলার নয়। একদা সহযোদ্ধা প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি বিদায় নিয়েছেন আগেই। এবার তাঁরই অনুগামী হলেন বাংলার ছোড়দা।
৳7,777 IPL 2025 Sports Bonus