বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলার জেরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা তিন আইপিএস আধিকারিককে কর্তব্য থেকে অবিলম্বে অব্যাহতি দিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে দ্বিতীয় চিঠি পাঠাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। টুইটারে পালটা যুক্তি সাজালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে ওই তিন আইপিএস অফিসার- এসপি ডায়মন্ড হারবার ভোলানাথ পান্ডে, এডিজি দক্ষিণ বঙ্গ রাজীব মিশ্র এবং ডিআইজি প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ প্রবীণ ত্রিপাঠিকে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করতেও বলা হয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশ মানতে নারাজ রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ওই তিন আধিকারিককে দায়িত্ব থেকে সরানো সম্ভব নয়। কেন্দ্রের চিঠির জবাবে বৃহস্পতিবার তাঁর নিজস্ব টুইটার হ্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘রাজ্যের আপত্তি সত্ত্বেও তিন দায়িত্বপ্রাপ্ত আইপিএস আধিকারিককে কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে পাঠানোর নির্দেশ আসলে ক্ষমতার রাজনীতিকরণ এবং ১৯৫৪ সালের আইপিএস ক্যাডার নিয়মাবলীর প্রত্যক্ষ অপপ্রয়োগের ফল।’ দ্বিতীয় টুইট বার্তায় মমতা লেখেন, ‘রাজ্যের ক্ষমতা সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে এবং পশ্চিমবঙ্গে কর্মরত আধিকারিকদের মনোবল ভাঙার জন্যই এই উদ্যোগ। এই পদক্ষেপ বিশেষ করে নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রীয় নীতির বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত। এই পদক্ষেপ অসাংবিধানিক এবং সম্পূর্ণ ভাবে অগ্রহণযোগ্য।’তৃতীয় টুইটে নেত্রী লেখেন, ‘রাজ্য প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশে কেন্দ্রের এই হঠকারিতা আমরা বরদাস্ত করব না। সাম্ররাজ্যবাদী ও অগণতান্ত্রিক শক্তির সামনে মাথা নত করবে না পশ্চিমবঙ্গ।’ সম্প্রতি জে পি নড্ডার রাজ্য সফরে তাঁর কনভয়কে লক্ষ্য করে আক্রমণ হানে দুষ্কৃতীরা। পাথরের আঘাতে ভেঙে দেওয়া হয় তাঁর গাড়ির কাচ। উল্লিখিত তিন আইপিএস আধিকারিক পশ্চিমবঙ্গ সফরে নড্ডার নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। ঘটনার জেরে তাদের প্রথম চিঠিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ওই তিন আইপিএস আধিকারিককে দিল্লিতে বদলির বিষয়টি জানায়। এর অর্থ, তাঁদের আর রাজ্য সরকারের অধীনে রাখা হবে না। তবে বদলির বিষয়টি নির্ভর করছে রাজ্য সরকারের তাঁদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্তের উপরে। কেন্দ্রের উদ্দেশে জবাবি চিঠিতে নবান্ন জানিয়ে দেয়, ওই আইপিএস আধিকারিকদের দিল্লি পাঠানো যাবে না এবং জে পি নড্ডার কনভয়ের উপরে আক্রমণের তদন্ত চলছে। ওই ঘটনার জেরে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানায় রাজ্য। সেই সঙ্গে জানানো হয়, ঘটনায় ইতিমধ্যে তিন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করাও হয়েছে।এ দিকে, নড্ডার কনভয়ে হামলার দায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূলের উপরেই চাপিয়েছে বিজেপি। উলটো দিকে, হামলার পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে বলে দাবি করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।