বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা এবং প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পরাজয় নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। মেদিনীপুর থেকে ৮৯ হাজার ভোটে জয়ী হওয়া দিলীপ ঘোষ এবারের লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান দুর্গাপুর কেন্দ্র থেকে ১,৩৭,৫৬৪ ভোটের ব্যবধানে তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদের কাছে পরাজিত হয়েছেন।
ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘যে লোকটা বিজেপিকে দাঁড় করাল এ রাজ্যে, দুই থেকে বিধায়ক সংখ্যা ৭৭ করল, তার এই অবস্থার জন্য সত্যিই খারাপ লাগছে। ওই মানুষটাকে জোর করে হারিয়ে দেওয়া হল।’ তিনি আরও বলেন, ‘খুব ভাল মানুষ দিলীপ ঘোষ। আমি দীর্ঘদিন দেখেছি ওঁকে বিধানসভায়। তবে যেহেতু এটা বিজেপির ভিতরের বিষয়, আমি এ ব্যাপারে বিশেষ আর কিছু বলব না।’
আরও পড়ুন। খান খান হল অধীর মিথ, গনি আবেগে ১ পেল কংগ্রেস, মালদা-মুর্শিদাবাদে ফের সবুজ ঝড়
গতবার মেদিনীপুর থেকে বড় ব্যবধানে জয়লাভ করেছিলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি তখন বলেছিলেন, পরেরবার এই আসন থেকেই জয়ের ব্যবধান আরও বাড়াবেন। তবে এবারে তাঁর আসন বদলে দলের সিদ্ধান্তে বর্ধমান দুর্গাপুর থেকে প্রার্থী করা হলেও তিনি ‘দাবাং স্পিরিট’ বজায় রেখে বর্ধমান দুর্গাপুরে প্রচার চালিয়েছেন। অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে জোরদার প্রচার করলেও শেষ পর্যন্ত তিনি হেরে গিয়েছে।
হারের পরদিন সকালে নিউটাউনে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘অসম্ভব কিছু না। সব সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়ে। বাংলার মানুষ বলবেন এই গুলো ঠিক হয়েছে না ভুল হয়েছে। আমাকে দল যখন যা বলেছে আমি নিষ্ঠার সঙ্গে করেছি। পুরো ইমানদারি দিয়ে করেছি। ফাঁকি রাখিনি। এবার বর্ধমানে হেরে যাওয়া কঠিন সিট ছিল। যারা সেখানে সেদিন ছিলেন তারাও মেনেছেন একটা জায়গায় অন্তত লড়াই হয়েছে।’
দলের সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছু শ্লেষ ধরা পড়ে তাঁর গলায়। হার নিয়ে বিশ্লেষণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যাঁরা আমাকে ওখানে পাঠিয়েছেন তারা ভাববেন।’
দিলীপ ঘোষের এই পরাজয় বিজেপির মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। মেদিনীপুরের মতো নিরাপদ আসন ছেড়ে বর্ধমান দুর্গাপুরে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের ভেতরে। ফিরহাদ হাকিমের দুঃখ প্রকাশ ও দিলীপ ঘোষের মন্তব্য দলীয় কৌশল এবং সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। যদিও এই প্রথম নয় এর আগেও বিভিন্ন প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষকে সহমর্মীতা জানিয়েছেন ফিরহাদ। প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে তাঁর টিপ্পনি করা নিয়ে কটাক্ষও করেন পুরমন্ত্রী। ফিরহাদের কথায়, ‘দিলীপদা সিরিয়াসলি রাজনীতিটা করেন না।’ ভোট হার নিয়ে তাঁর এবারের মন্তব্য তারই ধারাবাহিকতা।