ও চোর ছিল না- ইরশাদ আলমকে ‘পিটিয়ে খুন করার’ খবরটা পৌঁছানোর পর থেকেই বেলগাছিয়ার বস্তিতে চলছে আর্তনাদ। শুক্রবার বৌবাজারের হস্টেলে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে যে শুক্রবার সকালে যখন চাঁদনি চকে টিভি সারানোর দোকানে কাজ করতে যাচ্ছিলেন, সেইসময় মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে তাঁকে বৌবাজারের একটি হস্টেলের মধ্যে ঢুকিয়ে নেওয়া হয়। তারপর তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকী প্রাথমিকভাবে পুলিশ আসার পরেও হস্টেলের দরজা খোলা হয়নি। যখন দরজা খুলে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়, তার ঘণ্টাদুয়েক পরেই সবকিছু শেষ হয়ে যায়। মৃত্যু হয় ইরশাদের।
অনেক চেষ্টা ইরশাদের প্রাণ বাঁচানো যায়নি
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, ৪৭ বছরের ইরশাদকে যখন হাসপাতালে আনা হয়েছিল, তখন তাঁর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক ছিল। একাধিক আঘাত ছিল শরীরে। ওই চিকিৎসক বলেন, ‘ওঁকে যাতে বাঁচানো যায়, সেজন্য আমরা সবরকমের চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ওঁকে বাঁচানো যায়নি। হাসপাতালে নিয়ে আসার দু’তিন ঘণ্টার মধ্যে ওঁর মৃত্যু হয়েছে।'
আরও পড়ুন: Birati lynching: বিরাটিতে শিশুচোর সন্দেহে নিগৃহীত মহিলা আসলে শিশুটির মা, জানাল রেল পুলিশ
হস্টেল থেকে ৬ ক্রিকেট ব্যাট উদ্ধার পুলিশের
সেই ঘটনার পরে বৌবাজারের ওই হস্টেল থেকে ছ'টি ক্রিকেট ব্যাট এবং একটি লাঠি উদ্ধার করেছে পুলিশ। নাম গোপন রাখার শর্তে এক পুলিশ অফিসার বলেন, 'জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।' পরে হস্টেলের ১৪ জন আবাসিককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ধৃতদের বিরুদ্ধে অপহরণ এবং খুনের ধারা যোগ করা হচ্ছে বলে একটি মহলের তরফে দাবি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বনগাঁর পর বেড়ি গোপালপুর, ফের উত্তর ২৪ পরগনায় শিশুচোর সন্দেহে গণপিটুনি
কঠোর শাস্তির দাবি ইরশাদের পরিবার ও প্রতিবেশীদের
নাম গোপন রাখার শর্তে অপর এক পুলিশ অফিসার বলেছেন, ‘হস্টেলের আবাসিকরা দাবি করেছে, ইরশাদ নাকি স্বীকার করে নিয়েছিলেন যে উনি মোবাইল ফোন চুরি করেছেন।’ যদিও ইরশাদের পরিবার এবং প্রতিবেশীদের দাবি, ইরশাদ বস্তিতে থাকতেন বটে। কিন্তু চোর ছিলেন না। চুপচাপ, শান্ত প্রকৃতির ছেলে ছিলেন। রোজকার মতোই সকাল-সকাল কাজে বেরিয়েছিলেন। অভিযুক্তদের যাতে কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়, সেই দাবি তুলেছেন ইরশাদের পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীরা।
আরও পড়ুন: Barasat Violence: শিশুচুরির গুজবকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র বারাসতের কাজিপাড়া, আক্রান্ত পুলিশও