মাঝরাতে কলকাতায় এসেছেন ইডির অ্যাক্টিং ডিরেক্টর রাহুল নবীন। তাঁর সঙ্গে এসেছেন কয়েকজন উচ্চপদস্থ অফিসার। মঙ্গলবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসছেন ইডি অফিসাররা। সিজিও কমপ্লেক্সে এই তৎপরতা দেখা গিয়েছে। রাজ্যপাল ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজিকে রাজভবনে তলব করে রিপোর্ট চেয়েছেন।
ইডির ডিরেক্টর রাহুল নবীন।
সন্দেশখালিতে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তল্লাশি করতে গিয়েছিল। আর সেই অভিযানে গিয়ে বেধড়ক মারধর খান ইডির অফিসাররা। আর সেই রেশ থাকতেই নয়াদিল্লিতে ইডির সদর দফতরে এই নিয়ে জোর বৈঠক হয়। আর তারপরই নয়াদিল্লি থেকে কলকাতায় উড়ে এসেছেন ইডির শীর্ষ আধিকারিকরা। আজ, মঙ্গলবার থেকে রাজ্যে আবার তৎপরতা বাড়তে পারে ইডির। প্রথমে সন্দেশখালিতে। তারপরে বনগাঁয় হামলার পরিস্থিতি তৈরি হয়। এই আবহে কলকাতায় এলেন ইডির ডিরেক্টর রাহুল নবীন। সোমবার রাতেই কলকাতা পৌঁছেছেন তিনি। আজ ইডি অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ‘নিখোঁজ’ তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের খোঁজে নতুন পথ দেখাবেন তিনি।
এদিকে শুক্রবার উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে রেশন দুর্নীতির তদন্ত করতে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শাহজাহানের বাড়িতে হানা দেয় পাঁচ ইডি অফিসারের একটি দল। সরবেড়িয়া গ্রামে শাহজাহানের বাড়িতে তদন্তকারীরা পৌঁছতেই ঘিরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। তৃণমূল কংগ্রেস নেতার বাড়ির সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করেন ইডি অফিসাররা। ভিতর থেকে সাড়া না মেলায় দরজা ভাঙতে যান তাঁরা। ঠিক তখনই তাঁদের ঘিরে ফেলে ব্যাপক মারধর শুরু হয় বলে অভিযোগ। আবার শঙ্কর আঢ্যকে গ্রেফতার করে বাড়ি থেকে বের করে আনার সময়ও আক্রমণের মুখে পড়েন ইডির অফিসাররা এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা।
অন্যদিকে ইডির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পুলিশ সুপারকে আগে থেকে জানানো সত্ত্বেও সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়নি। পাঠালে বনগাঁয় প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্করকে নিয়ে বেরনোর সময় ইডির উপর হামলার ঘটনা ঘটত না। সন্দেশখালিতে তেমন সুযোগ ছিল না। হঠাৎ আক্রমণ হয়। তবে এফআইআর করা সত্ত্বেও সন্দেশখালির ঘটনায় এখনও এফআইআরের কপি দেয়নি পুলিশ। একইদিনে দু’বার আক্রমণের ঘটনা নিয়ে সরগরম হয়ে ওঠে রাজ্য–রাজনীতিতে। ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনদিন কেটে গেলেও শাহজাহান গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভপ্রকাশ করেন তিনি। তবে ডিজিপি রাজীব কুমার জানান, সন্দেশখালির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
এই আবহে মাঝরাতেই কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন ইডির অ্যাক্টিং ডিরেক্টর রাহুল নবীন। তাঁর সঙ্গে এসেছেন কয়েকজন উচ্চপদস্থ অফিসার। মঙ্গলবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসছেন ইডি অফিসাররা। সিজিও কমপ্লেক্সে এই তৎপরতা দেখা গিয়েছে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজিকে রাজভবনে তলব করে রিপোর্ট চেয়েছেন। তার মধ্যেই ইডির ডিরেক্টর এবং উচ্চপদস্থ অফিসারদের আগমণ কৌতূহল বাড়িয়েছে। ইডির ডিরেক্টর রাহুল নবীন ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দায়িত্বে নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম বাংলায় পা রাখলেন। তাঁর কলকাতায় আসা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। নবীন ইডি’র সদর দফতরে আগে প্রধান ভিজিল্যান্স অফিসার ছিলেন।