কেন্দ্রীয় সরকারের বিদেশনীতিকে তুলোধনা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলের জেলার নেতাদের নিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি সভা ছিল। সেখান থেকে সুর চড়ান তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরে বাংলাকেই বাদ দেওয়া হল বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হাসিনাজি নিজেই আমার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন’। সুতরাং এই সাক্ষাৎ না হওয়ার জন্য মাঝে দেওয়াল হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার বলেই ইঙ্গিত মমতার।
ঠিক কী বলেছেন তৃণমূলনেত্রী? এখন চারদিনের ভারত সফরে নয়াদিল্লিতে এসেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অথচ বাংলাকে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এদিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘হাসিনাজি নয়াদিল্লিতে এসেছেন। আমার সঙ্গে ওনার ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুবই ভাল। দুর্গাপুজোর সময়ে আমি ওনাকে চিঠি দিই। উনি আমাকে শাড়ি পাঠান। আম পাঠান, কখনও ইলিশ পাঠান। আমি শুনেছি, উনি এই সফরে আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু দিল্লি তা শোনেনি। এই প্রথম দেখলাম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দিল্লিতে এসেছেন, অথচ বাংলাকে বাদ দেওয়া হল।’
কেন বাংলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ? ভারত–বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশ। তাই কূটনৈতিক সম্পর্কও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে আবার বড় ভূমিকা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের। এপার বাংলার সঙ্গে ওপার বাংলার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এমনকী দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য থেকে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক—বাংলা ও বাংলাদেশ একসূত্রে গাঁথা। আবার নিরাপত্তার বিষয়ও এখানে জড়িয়ে রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যা এখনও হয়নি। তার জেরে বাইরের দেশের কাছে খারাপ বার্তা গেল ভারত নিয়ে বলে মনে করা হচ্ছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অভিযোগ নিয়ে বিদেশমন্ত্রক এখনও সরকারিভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই গোটা বিষয়টি নিয়ে বোঝাতে চান, পুরো ব্যাপারটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে করেছে নয়াদিল্লি। অতীতে তাঁর শিকাগো সফরে থেকে রোম সফরে নয়াদিল্লি তথা নরেন্দ্র মোদী সরকার অনুমতি দেয়নি। চিন তাঁকে আমন্ত্রণ করলেও আপত্তি তোলা হয়েছিল। এবারও সেটাই করা হয়েছে। তার জেরেই দেখা হল না হাসিনা–মমতার।