সারদাকাণ্ডের তদন্তে IPS রাজীব কুমারকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়ে ফের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল সিবিআই। ২৭৭ পাতার সেই আবেদনে কেন রাজীব কুমারকে হেফাজতে প্রয়োজন তা নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। ২০১৩ সালে সারদাকাণ্ডে গ্রেফতারির পর তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ ইডির কাছে যে বয়ান দিয়েছিলেন আবেদনে উল্লেখ রয়েছে তারও।
সিবিআই সূত্রের খবর, গত বছর রাজীব কুমার কলকাতা হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল তারা। সম্প্রতি সেই আবেদন গ্রহণ করেছে আদালত। এর পরই গত ২৩ ডিসেম্বর আদালতে ২৭৭ পাতার হলফনামা জমা দিয়ে ফের রাজীব কুমারকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে সিবিআই।
হলফনামায় ২০১৩ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সারদাতদন্তে সিবিআই যে সব তথ্য হাতে পেয়েছে তা তুলে ধরা হয়েছে। সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে সারদাতদন্তে গ্রেফতার বিভিন্ন ব্যক্তিদের বয়ান। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কুণাল ঘোষ ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের বয়ান।
গ্রেফতারির পর কুণাল ঘোষ ইডিকে জানিয়েছিলেন, ২০১১ সালের নির্বাচনে মোটা টাকা ঢেলেছিলেন সুদীপ সেন ও অ্যালক্যামিস্টের কর্ণধার কেডি সিং। দুজনে মিলে ২০৫টি কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীদের প্রত্যেককে ২৫ লক্ষ টাকা করে দিয়েছিলেন। সেই টাকা বণ্টনের দায়িত্বে ছিলেন মুকুল রায় ও রজত মুখোপাধ্যায়। এদের মধ্যে রজতবাবু সারদাকাণ্ডে গ্রেফতার হলেও মুকুলের গায়ে হাত পড়েনি।
ওদিকে দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের বয়ান অনুসারে বিধাননগরের সেক্টর ফাইভে মিডল্যান্ড পার্ক নামক ভবনে সারদার সদর দফতর ছিল। সেখানে প্রতি রাতে গাড়িতে করে ট্রাঙ্ক ভর্তি টাকা আসত। সেই টাকা আবার চলে যেত অন্য কোথাও।
সিবিআইয়ের দাবি, বিধাননগরের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার হিসাবে এসবকিছুরই খবর ছিল রাজীব কুমারের কাছে। দুর্নীতি বন্ধ করার বদলে উলটে প্রভাবশালীদের আড়াল করেছেন তিনি। ফলে সারদাকাণ্ডের বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের পর্দা ফাঁস করতে গেলে তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ আশু প্রয়োজন।