আরজি করে তরুণী চিকিৎসকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তোলপাড় হয়ে উঠেছিল গোটা বাংলা। হাসপাতালের যে জায়গায় এই নৃশংস ঘটনা ঘটেছে, সেই স্থান একবার ঘুরে দেখতে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। সিবিআই আগের দিন জানিয়েছে, এ বিষয়ে তাদের কোনও আপত্তি নেই। বৃহস্পতিবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে এই মামলার শুনানি হয়। হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে শিয়ালদা এসিজেএম (অ্যাডিশনাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) আদালত।
আরও পড়ুন: কোথায় মেয়ের উপরে অত্যাচার? দেখতে চান আরজি করে নির্যাতিতার বাবা-মা, CBI কী বলল?
হাইকোর্ট জানায়, শুধু ঘটনাস্থল নয়, আশপাশের এলাকাও দেখার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি বিষয় হওয়ায়, অনুমতির প্রয়োজন আছে বলেই পরিবারের আইনজীবীর বক্তব্য। তাঁরা জানান, সরাসরি সেমিনার রুমের ভিতর নয়, বাইরে ও পাশের এলাকাগুলি একবার দেখে নিতে চান নির্যাতিতার বাবা-মা। যেহেতু এটি স্পর্শকাতর মামলা, তাই আদালতের অনুমতি ছাড়া কিছু করতে চান না। সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী (সিআরপিএফ)-এর নিরাপত্তাও রয়েছে। এছাড়াও, নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষের আইনজীবীর সঙ্গে ক’জন জুনিয়র সঙ্গী থাকতে পারবেন, তাও নির্ধারণ করবে শিয়ালদা আদালত। আবেদন জমা পড়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। উচ্চ আদালত আরও জানিয়েছে, রাজ্য সরকার যদিও এই বিষয়ে নিজেদের মত দিতে চায়, তা-ও শিয়ালদা আদালত বিবেচনা করবে। এদিন রাজ্যের তরফ থেকে আদালতে বলা হয়, নতুন করে তদন্ত হবে কি না, আগে সেটাই ঠিক হোক। এই আবেদন যেন মিডিয়া আকর্ষণের চেষ্টা না হয়।
অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের আইনজীবী স্পষ্ট করে বলেন, যদি নির্যাতিতার পক্ষ ঘটনাস্থল দেখতে চায়, তবে তাদের কোনও আপত্তি নেই। হাইকোর্ট আরও নির্দেশ দিয়েছে, মূল মামলায় প্রতিটি পক্ষকে হলফনামা জমা দিতে হবে। সিবিআইকে নতুন রিপোর্ট জমা দিতে হবে শিয়ালদা আদালতে। এই মামলার পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ শুনানি হতে পারে আগামী ১৮ অগস্ট কলকাতা হাইকোর্টে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৯ অগস্ট রাতে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এক তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুন হন। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। দীর্ঘ শুনানির পর শিয়ালদা আদালত তাঁকে দোষীসাব্যস্ত করে এবং আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা দেয়। তদন্তভার পরে সিবিআইয়ের হাতে যায়।