স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্সের মামলা চলছে। তাই শাশুড়িকে 'টাইট' দিতে গুন্ডাবাহিনী নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠল এক মহিলার বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, শ্বশুরবাড়ি থেকে শাশুড়িকে তাড়াতে বাড়ির ভিতর ওই মহিলা সাইরেন লাগিয়ে দেন বলেও অভিযোগ উঠেছে! বউমার 'অত্যাচারে' বাড়িছাড়া হওয়ার পর শেষমেশ কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই বৃদ্ধা। সব শুনে অবিলম্বে তাঁকে তাঁর বাড়িতে ঢোকার এবং সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বসবাস করার সমস্ত অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। কড়া ধমক দেন বৃদ্ধার কীর্তিমান বউমাকেও।
ঘটনা প্রসঙ্গ জানা গিয়েছে, বৃদ্ধ বয়সে মাথার ছাদ হারিয়ে সুবিচার চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন ওই বৃদ্ধা। তাঁর অভিযোগ, তাঁর ছেলের সঙ্গে বউমার বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে। সেই মামলার মাঝেই হঠাৎ ছেলের বউ সন্তানকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে হাজির হন এবং সঙ্গে করে গুন্ডাদের নিয়ে আসেন!
এরপর বাড়ির স্নানঘর, রান্নাঘর, আলমারি, ফ্রিজ প্রভৃতিতে তালাচাবি লাগিয়ে দেন মহিলা। বৃদ্ধা শাশুড়ি যাতে বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন, তার জন্য বাড়ির ভিতর উচ্চস্বরে সাইরেন বাজাতে থাকেন! বিচারপতি সিনহা পুরোটা শোনার পর বৃদ্ধার বউমাকে কড়া ভাষায় জানিয়ে দেন, অবিলম্বে বৃদ্ধাকে তাঁর বাড়িতে ঢুকতে এবং সুস্থভাবে বসবাস করতে দিতে হবে। না হলে ভবিষ্যতে বউমাকেই ওই বাড়ি থেকে উৎখাত করার নির্দেশ দেওয়া হবে।
এর প্রেক্ষিতে বৃদ্ধার বউমার আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল সন্তানকে নিয়ে মধ্যস্থতা করেই শ্বশুরবাড়িতে থাকতে চান। জবাবে হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এই মামলায় যেভাবে একটি শিশুকে ঢাল করা হচ্ছে, তা কাম্য নয়। উপরন্তু, ওই শিশু দেখছে, কীভাবে তার মা তার ঠাকুমার সঙ্গে আচরণ করছে। শিশুর উপরেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আদালত শঙ্কা প্রকাশ করেছে।
এই প্রেক্ষিতে বিচারপতি সিনহা অভিযুক্ত বউমাকে ভালো আচরণ করারও নির্দেশ দেন। মনে করিয়ে দেন, আজ তিনি যে আচরণ করছেন, তা দেখে ও শিখে ভবিষ্যতে তাঁর সন্তানও তাঁর সঙ্গে একই আচরণ করতে পারে। তাই, অন্তত সন্তানের স্বার্থে তিনি যেন শাশুড়ির সঙ্গে ভালো আচরণ করেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ২০ মে।