৭ বছর আগে চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন পুরসভার কর্মী। তারপরেও গ্র্যাচুইটি সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এমনকী প্রাপ্য ২৫ লক্ষ টাকার মধ্যে মাত্র পেয়েছেন ৩৪ হাজার টাকা। আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও তিনি পুরো অর্থ পাননি। এই অবস্থায় হাইকোর্টের রোষের মুখে পড়লেন পুরসভার ডিরেক্টর। আদালতে নির্দেশ, ওই অবসরপ্রাপ্ত কর্মী টাকা না পাওয়া পর্যন্ত ডিরেক্টর অফ লোকাল বডিজের বেতন বন্ধ থাকবে।
আরও পড়ুন: রাজ্যের কাছে যথেষ্ট টাকা আছে, ইচ্ছে থাকলেই উপায়, ট্রাম নিয়ে স্পষ্টবাক হাইকোর্ট
জানা গিয়েছে, ঘটনাটি বহরমপুর পুরসভার। অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর নাম ভবানীশঙ্কর রায়। গ্র্যাচুইটি সহ অবসরকালীন অন্যান্য সুযোগ সুবিধা না পাওয়ায় তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। এর আগে গত মাসে হাইকোর্ট টাকা মেটানোর নির্দেশ দিয়েছিল। তারপরেই পুর দফতর এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে চিঠি আদানপ্রদান শুরু হয়। কিন্তু, তারপরও টাকা মেটানো হয়নি ওই কর্মীর। বৃহস্পতিবার মামলাটি ওঠে বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। সেই অভিযোগ শুনে বেজায় ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কোন দফতর টাকা মেটাবে সেটা তাদের নিজেদের বিষয়। এর জন্য কেন একজন সাধারণ কর্মীকে অবসরের পর সরকারের বিভিন্ন দরজায় ঘুরতে হবে? হেনস্তা হতে হবে? তাই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। তিনি বলেন, একজন কর্মীকে এভাবে হয়রানি করা একবারেই বরদাস্ত করা হবে না।
যদিও পুরসভার তরফে আইনজীবী জানান, গত নভেম্বরে আদালত নির্দেশ দিয়েছিল। তারপরেই ওই কর্মীর পেনশনের টাকা অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে। তবে গ্র্যাচুইটির যে টাকা রয়েছে তার মধ্যে ৪০ শতাংশ দিয়ে থাকে পুরসভা এবং বাকিটা রাজ্য সরকার দিয়ে থাকে। তিনি জানান, এই টাকার জন্য ইতিমধ্যেই এই নিয়ে অর্থ দফতরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে আইনজীবীর সেই যুক্তিতে সন্তুষ্ট হননি বিচারপতি। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কে টাকা দেবে তা নিয়ে দুই দফতর লড়াই করুক। তবে একজন কর্মীর হয়রানি এভাবে বরদাস্ত করা যাবে না।
বিরক্ত হয়ে বিচারপতি রাজ্যের আইনজীবীকে পুরসভা চালানোর দায়িত্ব নিতে বলেন। তবে শেষ পর্যন্ত আদালত জানিয়েছে, মামলার পরবর্তী শুনানিতে দেখা হবে আবেদনকারীর প্রাপ্য টাকা মেটানো হয়েছে কিনা। একই সঙ্গে এই সময়ের মধ্যে ডিরেক্টরের বেতন বন্ধ থাকবে। এদিন মামলার শুনানিতে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন ডিরেক্টর। আগামী ১৬ জনুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি। ওইদিনও ভার্চুয়াল মাধ্যমে ডিরেক্টরকে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।