মাত্র একসপ্তাহ আগেই চলেছে তাণ্ডব! সেই স্মৃতি এখনও টাটকা। সেদিকে চোখ যায়, সেদিকেই দেখা যায় ধ্বংসলীলার অবশেষ! এই অবস্থায় আজ (শনিবার - ১৯ এপ্রিল, ২০২৫) যখন মুর্শিদাবাদের উপদ্রুত এলাকায় (ধুলিয়ান) পৌঁছলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা, তাঁদের দেখে বুকফাটা কান্নায় ভেঙে পড়লেন স্থানীয় মহিলারা। কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে কেউ কেউ! যা দেখে বিহ্বল হয়ে যান কমিশনের প্রতিনিধিরাও। তাঁরা স্থানীয় মহিলাদের জড়িয়ে ধরে তাঁদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন।কিন্তু, ধুলিয়ানের বাসিন্দারা কোনও আশ্বাসবাণীতেই আর আশ্বস্ত হতে পারছেন না। তাঁদের বক্তব্য, তাঁরা শান্তিতে বাঁচতে চান। তাঁরা সর্বসমক্ষেই জানান, একমাত্র এলাকায় যদি বিএসএফ ক্যাম্প তৈরি করা হয়, তবেই এলাকা শান্ত থাকবে। তাই, ধুলিয়ানে স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্পে তৈরির দাবি তুলেছেন এলাকার ভীত, সন্ত্রস্ত মহিলারা।সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা তথ্য অনুসারে - তাঁরা বিএসএফ-এর সুরক্ষার ঘেরাটোপে থাকতে এতটাই মরিয়া যে জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যদের এলাকার মহিলারা জানিয়েছেন, প্রয়োজনে তাঁরা নিজেদের বাড়ির ঘর ছেড়ে দেবেন। দরকার হলে সেখানেই স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্প করা হোক। কিন্তু, কোনওভাবেই যেন বিএসএফ-কে এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া না হয়!সূত্রের দাবি, জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা এই বিষয়ে এলাকাবাসীকে তাঁদের তরফ থেকে যথাসম্ভব আশ্বস্ত করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার পুরো বিষয়টির উপর নজর রেখেছে। সরকার প্রত্যেক আক্রান্তের পাশে আছে। জাতীয় মহিলা কমিশনও কেন্দ্রকে তাদের রিপোর্ট দেবে। তাতে স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্প তৈরি নিয়ে এলাকাবাসীর দাবির কথাও উল্লেখ করা হবে।প্রসঙ্গত, সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদের নামে সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের নানা প্রান্তে তুমুল অশান্তি ছড়ায়। ধুলিয়ান, জঙ্গিপুর, সামশেরগঞ্জ,সুতি প্রভৃতি অঞ্চলে জ্বলে উঠে হিংসার আগুন। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে ওঠ যে উপদ্রুত এলাকা ছেড়ে কয়েকশো মানুষ ডিঙি নৌকায় চেপে পালিয়ে যান এবং পাশের জেলা মালদার একটি স্কুলে গিয়ে আশ্রয় নেন। সেই দলে অধিংকাংশই ছিলেন মহিলা। তাঁদের সঙ্গে ছিল ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা। এমনকী, ঘরছাড়াদের মধ্যে গর্ভবতীরা পর্যন্ত রয়েছেন বলে দাবি সূত্রের।এই প্রেক্ষাপটে রাজ্য পুলিশ, কেন্দ্রীয়বাহিনী ও বিএসএফ-এর যৌথ প্রচেষ্টায় এলাকায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি অনেকটাই ফেরানো সম্ভব হয়েছে বলে দাবি প্রসাশনের। তারই মধ্যে এলাকা পরিদর্শন শুরু করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। মাঠে নেমে প্রকৃত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন রাজ্যপালও। ফলে এসব নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে।