আজ বড়দিন। আর এই বড়দিনে মেতে উঠেছে গোটা রাজ্য। বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন পরিচালিত ৩৭ তম বিষ্ণুপুর মেলায় অভিনব এক অনুষ্ঠান দেখা গেল। মেলার মূল মঞ্চে দেখা গেল আদিবাসী ফ্যাশন–শো। বাঁকুড়া জেলার আদিবাসী ভাইবোনদের নিয়ে র্যাম্প ওয়াক করলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি। নানা ধরনের পোশাক, হাতের কাজের জিনিস, গৃহস্থালির নানা সামগ্রী, হরেক রকম খাবারের সঙ্গে মেলায় বিশেষ আকর্ষণ ছিল ফ্যাশন শোয়ে আদিবাসী ছেলে মেয়েদের র্যাম্প ওয়াক। এই আদিবাসী ফ্যাশন শোয়ের মঞ্চে ঝড় তুললেন রাজ্যের খাদ্য সরবরাহ দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী তথা মুকুটমণিপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান জ্যোৎস্না মান্ডি।
এই র্যাম্পে দেখা গেল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একাধিক প্রকল্প। পাশাপাশি সমাজের কাছে বার্তা প্রেরণ করলেন আদিবাসীরা। কোনও অংশে এখন আর পিছিয়ে নেই তাঁরা। ভারতবর্ষের সমস্ত স্তরেই আদিবাসীদের দেখতে পাওয়া যায়। ফ্যাশন শোয়ে দেখা গেল আদিবাসী ডাক্তার আইনজীবী পাইলট অফিসার থেকে সমস্ত ধরনের মানুষজনকে। ফ্যাশন–শোয়ের মাধ্যমে আদিবাসী বা সাঁওতাল সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি, পোশাক, রীতি তুলে ধরার উদ্যোগ নেন মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি। র্যাম্পে হেঁটে নিজেও আপ্লুত তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের আদিবাসী সংস্কৃতিতে নানা পরব অনুযায়ী শাড়ি পরার যে ধরন, সে বিষয়ে সকলে জানেন না। সহরাই, বাঁধনা, করম–সহ নানা উৎসব ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান। প্রত্যেকটি উৎসব ও সামাজিক অনুষ্ঠানে আদিবাসী পুরুষ এবং মহিলাদের পৃথক পোশাক রয়েছে।’
আজ, বুধবার রাজ্যের মন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একগুচ্ছ প্রকল্প নিয়ে র্যাম্প ওয়াক করলেন। ক্যানসার সচেতনতায় একটি গ্রুপ নৃত্য করতেও দেখা যায় রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডিকে। নৃত্যানুষ্ঠানে মন্ত্রীকে দেখে প্রথমে চেনাই যাচ্ছিল না। রাজনৈতিক ময়দান ছেড়ে এভাবে নৃত্যানুষ্ঠান মঞ্চে মন্ত্রীকে দেখে আনন্দিত মানুষজন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পছন্দের ‘পাঞ্চি’ শাড়িও এখানে রাখা হয়েছিল। মনের ভয়, জড়তা কাটিয়ে সকলের সামনে র্যাম্পে হাঁটার আদবকায়দা ছেলেমেয়েদের শিখিয়ে দিয়েছিলেন জ্যোৎস্না নিজেই।
আরও পড়ুন: বড়দিনে আলিপুর চিড়িয়াখানায় উপচে পড়া ভিড়, গোটা রাজ্যজুড়ে উৎসবে মাতল জনগণ
এই উৎসবের আবহে মেলা কমিটির সভাপতি অনুসূয়া রায়ের বক্তব্য, ‘আদিবাসী সংস্কৃতি জনসমক্ষে তুলে ধরার জন্য এই অনুষ্ঠান করা হয়েছে মেলা কমিটির পক্ষ থেকে। আর রাজনৈতিক জীবন ছাড়াও আমাদের প্রত্যেকেরই আলাদা একটি জীবন আছে। তবে মন্ত্রীর এই অনুষ্ঠান দেখে সত্যিই সকলে অবাক হয়েছেন।’ আর আদিবাসী ছেলেমেয়েদের উৎসাহ দিতে তাঁদের সঙ্গে মঞ্চে হাঁটতে দেখা যায় রাজ্যের মন্ত্রীকেও। এই প্রসঙ্গে মন্ত্রীর কথায়, ‘শুধু সাঁওতাল বলে নয়, যে কোনও জাতির ক্ষেত্রেই গায়ের রং নিয়ে একটা বিভেদ থাকে। কালো মেয়েদেরও সুন্দর লাগে, তাঁরাও যে র্যাম্পে হাঁটতে পারেন সেই বার্তাই দিতে চেয়েছিলাম।’