আসল ঘটনা জানার জন্য তিনি অপেক্ষা করছিলেন। আর সেটা জানতে পারার পরই নিলেন কড়া অ্যাকশন। সরাসরি ফোন করে নিজের দলের বিধায়ককে জোরালো ধমক দিলেন। আর তাতেই বদলে গেল রাজ্য–রাজনীতির পরিস্থিতি। হ্যাঁ, চোপড়ার ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হামিদুল রহমানকে ফোন করে ধমক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিকেলে এই বিধায়ককে ফোন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাঁচ মিনিট কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিধায়কের সঙ্গে। আর চোপড়ায় যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে তার দিকে নজর রাখতে বিধায়ক হামিদুলকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে চোপড়ার সব পঞ্চায়েত এবং স্থানীয় ক্লাবগুলিকেও বার্তা পাঠাতে বলেছেন, যাতে আর কোনও সালিশি সভা না বসানো হয়। চোপড়ার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দলের কোনও পদে থাকলে অবিলম্বে তাঁকে সেই পদ থেকে ছেঁটে ফেলার নির্দেশ বিধায়ককে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বলে সূত্রের খবর।
এমন কড়া ধমক খেয়ে চাপে পড়ে গিয়েছেন চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমান। এটা যে হবে তিনি ভাবতেও পারেননি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে গিয়েছিলেন হামিদুল। তারপর এক সংবাদমাধ্যমকে হামিদুল রহমান বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী তো আমার অভিভাবক। তাই চোপড়ার ঘটনা নিয়ে আমাকে বকেছেন। এটা তাঁর অধিকারের মধ্যে পড়ে। আগামী দিনে যাতে এলাকায় আর এমন কোনও ঘটনা না ঘটে সেই নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।’ এই ধমক খাওয়ার পর অভিযুক্ত ‘জেসিবি’ ওরফে তাজিমুলকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন বিধায়ক হামিদুল। আর এই ঘটনা নিয়ে নতুন করে পথে নেমে পড়েছে বিজেপি।
আরও পড়ুন: ‘বাংলায় নির্বাচন কমিশন–কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকলে কোনও নির্বাচন সম্ভব নয়’, কল্যাণকে জবাব সৌমিত্রের
এই আবহে শুধু ধমকের উপর বিষয়টি থেমে থাকেনি। বরং চোপড়ার ঘটনায় জেলার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হামিদুল রহমানকে শোকজ করেছেন উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। সুতরাং প্রবল চাপের মধ্যে রয়েছেন এই বিধায়ক। দলীয় সূত্রে খবর, চোপড়ার বিধায়ককে শোকজের চিঠি পাঠানো হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল, হামিদুল রহমানকে শোকজের চিঠি পাঠিয়েছেন। এই চিঠির জবাব দিতে হামিদুলকে একসপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। হামিদুলের জবাব মিললেই সেটা রাজ্য নেতৃত্বকে পাঠাবেন জেলা সভাপতি বলে সূত্রের খবর। চোপড়ায় যুগলকে গণপিটুনির ঘটনায় এখন সরগরম রাজ্য–রাজনীতি। এই বিষয়ে হামিদুলের বক্তব্য, ‘আমি শোকজের চিঠি পেয়েছি। অবশ্যই জবাব দেব।’ আনন্দবাজার অনলাইন থেকে এই তথ্য মিলেছে।
চোপড়ায় এক তরুণীকে রাস্তায় ফেলে কঞ্চি দিয়ে প্রচণ্ড মারছেন জেসিবি। মেয়েটিকে চুলের মুঠি ধরে টেনে মাটিতে ফেলা হচ্ছে। আর এক তরুণকে একইসঙ্গে মারতে দেখা যায়। এমন একটি ভিডিয়ো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। (ভিডিয়ো’র সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল)। এই জেসিবি ওরফে তাজিমুল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা বলে পরিচিত। যদিও বিধায়ক হামিদুল রহমানের দাবি, তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও পদে নেই জেসিবি ওরফে তাজিমুল। তাই তাজমুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। এই ঘটনা নিয়ে হামিদুল প্রথমে যে বিবৃতি দিয়েছিলেন সেটা নিয়ে আপত্তি তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের দাবি, তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হামিদুল ‘আমাদের মুসলিম রাষ্ট্র’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করেছেন। পুলিশ তাজিমুলকে গ্রেফতার করেছে।