করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা কাটিয়ে প্রায় একমাস ধরে চলছে রাজ্যের স্কুল-কলেজের পঠন-পাঠন। স্কুলছুটদের স্কুলে ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। আর এরইমধ্যে শিশু শ্রমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভাতা না দেওয়ার অভিযোগ উঠল। প্রায় ১৩ মাস ধরে শিশু শ্রমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভাতা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। যারফলে শিশু শ্রমিক স্কুলে পড়ানো ছেড়ে দিয়ে টিউশন করাচ্ছেন অনেক শিক্ষক শিক্ষিকা। এর জেরে পড়াশোনা থেকে বিমুখ হয়ে পড়ছে শিশু শ্রমিকরা। ফলে রাজ্যে বাড়ছে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা।পূর্ব মেদিনীপুরের এক শিশু শ্রমিক স্কুলের শিক্ষিকার অভিযোগ, ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে টানা ১৩ মাস ধরে শিশু শ্রমিক স্কুলের বেতন বন্ধ রয়েছে। এরফলে বাধ্য হয়ে সংসারের খরচ চালাতে তিনি টিউশন করাচ্ছেন। এমনকি ভাতা না পাওয়ার কারণে তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য কলেজে ভর্তি হতে পারেননি বলেও জানান। তার অভিযোগ, এ নিয়ে জেলাশাসকের কাছে একাধিকবার আবেদন করা হলেও কোনও ফল পাওয়া যায়নি।প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরে ৩০ টি শিশু শ্রমিক স্কুল রয়েছে। এই স্কুলগুলি মিলিয়ে প্রায় ১০০ জন শিক্ষক শিক্ষিকার রয়েছে। সাধারণত দোকান, বাজার, ইটভাটার শিশুশ্রমিকদের সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের এই স্কুলে বিনামূল্যে পড়ানো হয়। ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় এই স্কুলগুলিতে। জাতীয় শিশু শ্রমিক প্রকল্পে প্রতিটি জেলায় এই স্কুল রয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকার স্কুলের ভাতার উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু গত ১৩ মাস ধরে ভাতা না পাওয়ার ফলে তীব্র আর্থিক সংকটে পড়েছেন ওই সমস্ত স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা। তার উপর করোনা পরিস্থিতির কারণে আর্থিক সঙ্কট আরও বেড়ে গিয়েছে বলে তাদের দাবি।শিক্ষকদের দাবি তারা এ বিষয়ে ব্লক প্রশাসন থেকে শুরু করে জেলা শাসকের কাছে একাধিবার আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু জেলাশাসকের দাবি এ বিষয়টি তার জানা নেই। এ বিষয়ে জেলাশাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাঝি বলেন, 'ভাতা বন্ধ আছে কিনা সেই বিষয়টি আমার জানা নেই তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।'