সুন্দরবনে যাঁরা বেড়াতে যান তাঁর ঘুরে দেখেন পর্যটন কেন্দ্র মৌসুনি দ্বীপ। এই দ্বীপের হাল এখন বেহাল। কারণ এখানের মাটির বাঁধে ভাঙন শুরু হয়েছে। আর এই ভাঙনের জেরে স্থানীয় গ্রামবাসীদের ঘুম উড়ে গিয়েছে। রবিবার দিনই দেখা গিয়েছিল, মৌসুনির বালিয়াড়ার সল্টঘেরিতে মাটির বাঁধ ঢেউয়ের দাপটে ভেঙেছে। বাঁধ উপচে নোনা জল ঢুকেছে গ্রামে। এই এলাকায় থাকে ৩০০টিরও বেশি পরিবার। ভাঙনে দ্বীপের একাধিক ট্যুরিস্ট কটেজে প্রভাব পড়েছে। দ্রুত স্থায়ী বাঁধ তৈরি না হলে আগামী দিনে তলিয়ে যেতে পারে গ্রামের বড় অংশ।
অমাবস্যার কটালে জলস্তর বেড়েছে। তার জেরেই চাপ পড়েছে বাঁধে। তখন ভাঙন দেখা দেয়। এই ঘটনার জেরে নামখানা ব্লকজুড়ে নদী বাঁধে ফাটল দেখা দেয়। আতঙ্কে রয়েছেন গ্রামবাসীরা। গোটা পরিস্থিতি দেখে সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘সামনে বর্ষা আসছে। সেচ দফতর নদী এবং সমুদ্রের বাঁধ মেরামতের কাজ করছে। যেসব জায়গায় ধস ও ফাটল দেখা দিয়েছে তা দ্রুত মেরামত করা হবে। পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছে জেলা প্রশাসন।’
আরও পড়ুন: বিপুল পরিমাণ তাজা কার্তুজ বসিরহাটে উদ্ধার, এসটিএফের হাতে গ্রেফতার দুই অস্ত্র ব্যবসায়ী
মৌসুনি দ্বীপের ওই অংশে তীব্র ঢেউয়ে দাপট দেখা দেয়। তাতেই বাঁধ ভেঙে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ, কয়েক কোটি টাকা খরচ করে নদী বাঁধ সংস্কার করা হয়েছিল। তবে সেই নদী বাঁধের একাংশ প্রাকৃতিক দুর্যোগ–সহ নানা কারণে ধসে তলিয়ে গিয়েছে নদীতে। রবিবার জল বেড়ে যাওয়া এবং সোমবার তীব্র ঢেউয়ের জেরে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে বাঁধে ফাটল দেখা দিতে শুরু করে। গ্রামবাসীদের দাবি, ‘রাজ্য সরকার বহু টাকা খরচ করেছে। কিন্তু স্থায়ী বাঁধের দরকার। শক্তপোক্ত বাঁধ নির্মাণ করা হলে এমন হতো না। বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসছে এবং মাটির বাঁধে ধস নামছে। আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।’
এখন পরিস্থিতি বেশ জটিল হয়ে গিয়েছে। গোটা বাঁধ ভেঙে পড়লে বানভাসী অবস্থা কেউ ঠেকাতে পারবে না। তখন গ্রামের বাড়িঘর থেকে শুরু করে চাষবাস সব জলের তলায় চলে যাবে। এখানের বাসিন্দা মাধবী গায়েনের বক্তব্য, ‘বাঁধ ভাঙনের জেরে বিঘের পর বিঘে জমি সমুদ্রে মিশেছে। এখন তা গ্রামের দিকে এগিয়ে আসছে। তাই সকলে ভয়ে আছি।’ রাজ্য সরকার বাজেটে নদী বাঁধ মেরামতের জন্য টাকা বরাদ্দ করেছে। তারপরও এমন হচ্ছে কেন? সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার কাছে জবাব চান মৌসুনির বালিয়াড়ার সল্টঘেরি গ্রামের বাসিন্দারা।