নিহত স্বামীর নিথর দেহ যখন বিছানায় পড়ে রয়েছে, সেই মুহূর্তে সেই একই বিছানায় স্বামীর মৃতদেহের পাশে নিশ্চিন্তে শুয়ে ছিলেন কাটোয়ায় স্বামী খুন কাণ্ডে ধৃত মহিলা মিতা দাস। শুধু তাই নয়, সেখানে শুয়ে শুয়েই মোবাইলে প্রেমিক অভিজিৎ বাগদির সঙ্গে প্রেমালাপ করছিলেন তিনি! জেরায় মিতা নিজেই এই তথ্য দিয়েছেন পুলিশকে।
মেঘালয় হানিমুন-খুন কাণ্ড নিয়ে যখন সারা দেশ উত্তাল, সেই আবহেই সামনে আসে কাটোয়া কাণ্ড। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজীব কুমার সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, রীতিমতো ঠান্ডা মাথায় কাটোয়ার বাসিন্দা মহাদেব দাসকে খুনের ছক কষেছিলেন তাঁর স্ত্রী মিতা ও মিতার প্রেমিক অভিজিৎ বাগদি। সেই পরিকল্পনা করা হয়েছিল এবারের জামাই ষষ্ঠীর দিন।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, প্রায় দেড় বছর আগে সোশাল মিডিয়ায় অভিজিৎ ও মিতার আলাপ হয়। ক্রমে সেই আলাপ গড়ায় বন্ধুত্বে। আর তারপরই দু'জনের মধ্যে তৈরি হয় প্রেমের সম্পর্ক। মিতা ও অভিজিৎ স্থির করেন, তাঁরা বিয়ে করে সংসার পাতবেন। কিন্তু, তাঁদের সেই 'স্বপ্নে কাঁটা' ছিলেন মিতার স্বামী মহাদেব দাস। সেই কারণেই তাঁকে চিরতরে পৃথিবী থেকেই সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেন মিতা ও অভিজিৎ!
পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর মিতা পুলিশকে জানিয়েছেন, খুনে যে কার্বলিক অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়েছিল, তা অভিজিৎই তাঁকে এনে দিয়েছিলেন। পরিকল্পনা মাফিক, মিতা মদের বোতলে সেই কার্বলিক অ্যাসিড মিশিয়ে দেন। সেই মদ পান করতেই কার্যত ভিতর থেকে 'দগ্ধে দগ্ধে' প্রাণ যায় মহাদেবের। কিন্তু, তাতেও নিশ্চিন্ত হতে পারেনি মিতা।
মদের সঙ্গে কার্বলিক অ্য়াসিড পান করার পর মহাদেব যখন জ্বালা-যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন, সেই সময়েই তাঁর মাথায় বাঁশ দিয়ে আঘাত করেন মিতা! তারও পরে স্বামীর মুখে বালিশ চেপে ধরেন তিনি! এরপর স্বামী যখন মারা গিয়েছেন বলে বুঝতে পারেন, তখন বিছানায় তাঁর মৃতেদেহের পাশে শুয়েই মোবাইলে প্রেমিকের সঙ্গে গল্প করতে শুরু করেন তিনি!
তদন্তে নেমে পুলিশ ইতিমধ্যেই খুনে ব্যবহৃত কার্বলিক অ্যাসিড, অ্যাসিড রাখার শিশি, বাঁশ, মদের বোতল, বালিশের ওয়ার উদ্ধার করেছে। মিতার পাশাপাশি তাঁর প্রেমিক অভিজিৎকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।