আরজি কর কাণ্ডের জেরে ফের একবার তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়ালেন দলের বিধায়ক তথা অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস হুমায়ুঁ কবির। শাসকদলের তরফে যখন লাগাতার আরজি করের নির্যাতিতা ডাক্তারদিদির পরিবারকে আক্রমণ করা হচ্ছে। তখন সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান নিলেন তিনি। নাম না করে ডাক্তারদিদির মা - বাবাকে প্রকাশ্যে আক্রমণের বিরোধিতা করলেন ডেবরার বিধায়ক। যার ফলে প্রশ্ন উঠছে, তবে কি আরজি কর কাণ্ডের জেরে তৃণমূলের ফাটল আরও গভীর?
নিম্ন আদালত আরজি কর কাণ্ডের রায়দানের পর থেকে আরজি কর মেডিক্যালের নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের মা - বাবার সঙ্গে তৃণমূলের নেতামন্ত্রীদের বাগযুদ্ধ চরমে পৌঁছেছে। হুমায়ুঁ কবিরের মন্তব্যে স্পষ্ট যা নিয়ে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে তৃণমূলের মধ্যেই। বুধবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, ‘একমাত্র প্রতিষ্ঠিত সন্তান হারানোর যন্ত্রণা সবাই বুঝবেন না। পাশে না থাকলেও তাঁরা যাই করুন বা বলুন তাঁদের সমালোচনা করা থেকে বিরত থাকা উচিত। ওঁদেরও বলব, রাজনৈতিক মন্তব্য নয়। আমি প্রথমদিন থেকে বলে আসছি সঞ্জয়ই একমাত্র অপরাধী।’
আরজি কর কাণ্ডের রায়ের পর রাজ্য সরকার খুনি সঞ্জয় রায়ের ফাঁসির সাজার দাবিতে হাইকোর্টে যাওয়ায় কড়া প্রতিক্রিয়া দেন নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা। তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীই তথ্যপ্রমাণ লোপাটের মূল হোতা। উনি পদত্যাগ করলেই আমাদের মেয়ের সুবিচার হবে।’
নির্যাতিতার বাবার মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন,আমরা অত্যন্ত সহানুভূতিশীল ওঁদের প্রতি। কিন্তু পুত্রীশোকে এমন কিছু বলা উচিত নয়, যা ওঁদের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। এখন যা হয়ে গিয়েছে, যাঁদের পাল্লায় পড়েছেন, এখন রাজনীতি করছেন ওঁরা। এটা ঠিক নয়।’’ ফিরহাদ আরও বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী ওঁদের দয়ায় বা বামপন্থী দলগুলির দয়ায় পদে বসে নেই! বাংলার মানুষ চেয়েছেন বলেই চেয়ারে বসে আছেন মুখ্যমন্ত্রী। কারও দয়ায় বসে নেই! মানুষের সমর্থন নিয়ে বসে রয়েছেন।’
মঙ্গলবার আরও তীব্র আক্রমণ শানান কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। তিনি বলেন, ‘পরিষ্কার ভাবে বলুন, সিপিএম এবং বিজেপি আমাকে যেটা বলছে, সেটা বলছি। তার জন্য আপনি কী চান? শুনেছি ডাক্তারদের চার-পাঁচ কোটি উঠেছিল। হ্যাঁ, যদি মনে করেন টাকা চান, টাকাই চান। সব কিছু টাকা দিয়ে ঢাকা যায়!’
মনে করা হচ্ছে, নাম না করে মদনকেই আক্রমণ করেছেন হুমায়ুঁ। কারণ তৃণমূলের অন্য নেতাদের সন্তানদের দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয় দেখা গেলেও মদন মিত্রের ২ ছেলের দেখা মেলে না। তাই কি হুমায়ুঁ লিখেছেন, ‘প্রতিষ্ঠিত সন্তান হারানোর যন্ত্রণা সবাই বুঝবেন না।’