গঙ্গা ভাঙনে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল হাওড়ার শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন। যার ফলে নদীতে তলিয়ে যাচ্ছিল বহু দুর্লভ গাছ। গার্ডেনের শতাব্দী প্রাচীন বহু গাছের অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছিল। এই অবস্থায় বোটানিক্যাল গার্ডেনকে বাঁচাতে বড় উদ্যোগ নিলেন কর্তৃপক্ষ। বোটানিক্যাল গার্ডেনে ভাঙন রুখতে গঙ্গার পাড়ে প্রায় ৫০০ মিটার এলাকা জুড়ে লাগানো হলো ম্যানগ্রোভ গাছের চারা। কর্তৃপক্ষের মতে, এরফলে যেমন গঙ্গা ভাঙন রোধ করা যাবে তেমনি নদীর জল দূষণ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা যাবে। বোটানিক্যাল গার্ডেনকে বাঁচাতে এই ম্যানগ্রোভ গাছগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।
আরও পড়ুন: সবুজ নষ্ট করে পার্ক হচ্ছে বটানিক্যাল গার্ডেনে, ৩ সদস্যের কমিটি গড়ল পরিবেশ আদালত
সম্প্রতি গঙ্গা ভাঙন রুখতে বোটানিক্যাল গার্ডেনে পরীক্ষামূলকভাবে ম্যানগ্রোভের চারা লাগানো হয়েছিল। তাতে সাফল্য মিলতেই এই পদক্ষেপ গার্ডেন কর্তৃপক্ষের। জানা গিয়েছে, গঙ্গার ধ্বংসলীলার কারণে সেখানে ম্যানগ্রোভের জঙ্গল তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। তবে লবণাম্বু উদ্ভিদ সেখানে হবে কি না সেটা নিয়েও উদ্বেগে ছিলেন কর্তৃপক্ষ। তবে তাতে সাফল্য মেলে। মূলত সামান্য লবণাক্ত জলে বাঁচতে পারে এই ধরনের ৭টি প্রজাতির চারা গাছ লাগানো হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে হাড়গোঁজা, পাইন, ওঁরাওঁয়ের মতো প্রজাতির ম্যানগ্রোভের চারা।
ইতিমধ্যে সেখানে ম্যানগ্রোভের আদর্শ বাস্তুতন্ত্র গড়ে উঠেছে। আরও এলাকা জুড়ে ম্যানগ্রোভের জঙ্গল তৈরি হবে বলে আশাবাদী বোটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষ। এবিষয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের এক আধিকারিকের কথায়, গঙ্গা ভাঙন এবং দূষণ রোধে ম্যানগ্রোভ বড় ভূমিকা নেবে। প্রাকৃতিকভাবেই এই উদ্ভিদ বেড়ে উঠছে। পরিকল্পনা রয়েছে আরও এক কিলোমিটার অংশে ম্যানগ্রোভের চারা লাগানোর।
যদিও শুধু বোটানিক্যাল গার্ডনে নয়, হুগলি নদীর পশ্চিম পাড়ে ভাঙনের সমস্যা দীর্ঘদিনের। এরমধ্যে বাউড়িয়া, শ্যামপুর গাদিয়াড়াতেও ভাঙনের সমস্যা তীব্র হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে নদী ভাঙন রোখার চেষ্টা করছে সেচ দফতর। এই অবস্থায় নদী ভাঙন রুখতে ম্যানগ্রোভের উৎপাদন আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছেন গার্ডেন কর্তৃপক্ষ। আধিকারিকদের মতে, নদীর দূষণ রুখতে ম্যানগ্রোভ প্রাকৃতিক ফিল্টারের কাজ করবে।