একেবারে ভয়াবহ পরিস্থিতি। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনা। পেছনে থেকে এসে ধাক্কা দেয় মালগাড়ি। বলা হচ্ছে ট্রেন চলছিল পেপার লাইন ক্লিয়ারেন্স অনুসারে। এবার প্রশ্ন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস যে লাইনে সেখানে মালগাড়ি এল কীভাবে? তবে এসব প্রশ্ন খতিয়ে দেখার আগে এখন আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করাটাই বড়় চ্যালেঞ্জ।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একের পর এক আহত যাত্রীদের নিয়ে আসা হচ্ছে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত লেগেছে তাদের। ইতিমধ্য়েই বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধিরা আহত যাত্রীদের রক্তের সহযোগিতায় হাত বাড়়িয়ে দিয়েছে।
ঝিরঝিরে বৃষ্টির মধ্য়েই কাউকে অ্যাম্বুল্যান্সে কাউকে আবার প্রাইভেট গাড়িতে চাপিয়ে আনা হচ্ছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কয়েকজনকে দুর্ঘটনাস্থলের কাছেই ফাঁসিদেওয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ট্রেন দুর্ঘটনার জেরে তাঁদেরই ঠিকানা এখন হাসপাতালের বেড।

এদিকে আহতদের যাতে রক্তের কোনও সমস্য়া না হয় সেকারণে সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। হেল্পডেস্কও খোলা হয়েছে হাসপাতাল চত্বরে। স্থানীয় শাসকদলের নেতারাও হাসপাতালে রয়েছেন। কোথাও যাতে ট্রেন দুর্ঘটনায় আহতদের সমস্য়া না হয় সেটা দেখা হচ্ছে।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন,খবর তো ভয়াবহ। আটজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। ৪০জনকে আহত অবস্থায় আনা হয়েছে। একজন অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। সমস্ত পরিষেবা চালু আছে। ব্লাড ব্যাঙ্কে ছাত্রছাত্রীরা ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার লোকজন রক্তদান করছেন। ২৪ ঘণ্টা যাতে রক্তদানের ব্যবস্থা থাকে তার ব্যবস্থা থাকে তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিভিন্ন রোগীদের চিকিৎসকদের সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের টিম সবসময় কাজ করে। সকলে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। স্টুডেন্টরা, জুনিয়র চিকিৎসকরা ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।
এদিকে ওই ট্রেনে থাকা যাত্রীরা তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যমকে। এক মহিলা যাত্রী বলেন, আমরা সামনে ছিলাম। কিন্তু লামডিংয়ের ইঞ্জিন বদলে যায়। সেকারণে কোনওরকমে বেঁচে যাই। না হলে আমরাও মরে যেতাম। জুন মাসে করমন্ডল এক্সপ্রেসের সঙ্গে যা হল সেটাও এই ট্রেনেও হল। রেল সফর নিরাপদ নয়। এত পরিবারে কেন বিপর্যয় নেমে এল? অত রক্ত দেখে আমরাও নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলাম।
অপর এক যাত্রী বলেন, আগরতলা থেকে ১৬ তারিখ রওনা দিয়েছিলাম। আজ ৮টা ৪০ মিনিটে দুর্ঘটনা হল। বৃষ্টি হচ্ছিল। সেই সময় দুর্ঘটনা।
শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, ৪২জনকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ২০জনকে ফাঁসিদেওয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উদ্ধারকারী টিম দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।