গভীর মাটির নিচে লুকিয়ে ছিল মহামূল্য সম্পদ। আর সেই গুপ্তধনের খোঁজ মিলল বাংলার মাটিতেই। উত্তর ২৪ পরগনার কাঁকপুল এবং নদিয়ার রানাঘাটে সম্প্রতি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের দুটি নতুন ব্লকের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, এই আবিষ্কার রাজ্যের জ্বালানি সম্ভাবনায় এক নতুন দিগন্ত খুলে দিল।
আরও পড়ুন: 'বারুইপুরেও খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস মিলবে, ১০০% আশাবাদী…', খনন শুরু করছে ONGC
জানা যাচ্ছে, আনুমানিক এই সম্পদের মূল্য ৪১ হাজার কোটি টাকার বেশি। সরকারি হিসেবে জানা গিয়েছে, এই দুটি ব্লক থেকে মিলতে পারে প্রায় ০.৯৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন তেলের সমতুল্য শক্তি। এর বাজারমূল্য প্রায় ৪১ হাজার ৭০ কোটি টাকা বলে অনুমান করছে কেন্দ্র। ওএনজিসি-র অধীনে থাকা WB-ONN-2005/4 নম্বর ব্লকে এই তেল ব্লকের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বলে সংসদে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। রাজ্যসভার প্রশ্নোত্তরে এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক জানায়, বাংলায় জ্বালানির নতুন সম্ভার খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের মতে, এই আবিষ্কারের ফলে রাজ্যের আর্থিক উন্নয়ন যেমন ত্বরান্বিত হবে, তেমনই দেশের সামগ্রিক শক্তিনীতিতেও তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।
অন্যদিকে, এর কিছুদিন আগেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে খনিজ তেল ও গ্যাসের সম্ভাব্য ভাণ্ডারের খোঁজে নেমেছে ওএনজিসি। ইতিমধ্যেই পরীক্ষামূলক খননের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বেগমপুর পঞ্চায়েতের ২০০ কলোনী এলাকায় রাস্তা নির্মাণ, যন্ত্র বসানোর পরিকাঠামো ও আধিকারিকদের থাকার ব্যবস্থার কাজ জোরকদমে এগোচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় ১০০ একর জমিতে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বারুইপুর পূর্বের বিধায়ক বিভাস সর্দার। তিনি আশাবাদী, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে স্থানীয় মানুষের জীবনে আর্থিক গতি আসবে, বাড়বে কর্মসংস্থানের সুযোগ। জমি দিয়েছেন যাঁরা, তাঁদের প্রতি বিঘার জন্য ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে তিন বছরের চুক্তিতে।
একদিকে রানাঘাট ও কাঁকপুলে মিলল নির্দিষ্ট ব্লক চিহ্নিত সম্পদ, অন্যদিকে বারুইপুরে এগোচ্ছে খনন প্রকল্প। সবমিলিয়ে, জ্বালানি ক্ষেত্রে বাংলার মানচিত্রে এক নতুন সম্ভাবনার সূচনা হল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদি এই সমস্ত প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়, তা হলে তা রাজ্যের অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থান দু’টিতেই বড়সড় প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।