সুন্দরবন জল–জঙ্গলে ঘেরা। আবার গঙ্গাসাগরেও জল–জঙ্গল আছে। তবে এখানের নানা দ্বীপগুলি মহকুমার মর্যাদা পায়নি। এই দ্বীপগুলি মহকুমার মর্যাদা পাক সেটা চান স্থানীয় বাসিন্দারা। সেগুলি না হওয়ায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা–পাথরপ্রতিমার বাসিন্দাদের আসতে হয় কাকদ্বীপে। আর উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ–সন্দেশখালির বাসিন্দাদের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা হয়। এই বিষয়টি মাথায় রেখে গঙ্গাসাগরে এসে ওই ব্লকগুলিকে একসঙ্গে নিয়ে নতুন মহকুমা তৈরি করা হবে বলে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই কথা প্রকাশ্যে শোনার পর গ্রামবাসীরা আশার আলো দেখছেন। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী সাগরদ্বীপের একটি সভামঞ্চ থেকে মহকুমা গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে মুড়িগঙ্গা নদীর উপরে গঙ্গাসাগর সেতু তৈরি করবে রাজ্য সরকারই বলে জানিয়ে দেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দেয়নি গঙ্গাসাগর মেলাকে। টাকাও দেয়নি। তবে সময় এলে জাতীয় মেলা হিসেবে স্বীকৃতি পাবে গঙ্গাসাগরও বলে জানিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলা আদায়ের দাবি থেকে সরে আসবে না বাংলা। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের সরকারি কাজের জন্য আপনাদের যেতে হয় সেই কাকদ্বীপে। মহকুমা শহর পৌঁছনোর জন্য বেশিরভাগ সময় কেটে যায়। এই গঙ্গাসাগরের জন্য আমরা সাগরের পাড় বাঁধানো থেকে শুরু করে জেটি, হেলিপ্যাড, থাকার ব্যবস্থা, সহজে যাতায়াত সব করেছি।’
আরও পড়ুন: কলকাতা মেট্রোতে ব্যাপক হারে টোকেন চুরির অভিযোগ, লোকসান রুখতে কিউআর কোড ভরসা
এখানে মানুষের অসুবিধার কথা যে তিনি জানেন সেটাও নিজের কথায় উল্লেখ করেন। গোসাবা–পাথরপ্রতিমার মতো এলাকার কথা তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি জানি এই সব জল–জঙ্গলে ঘেরা মানুষরা কতটা অসুবিধা সহ্য করে জীবনযাপন করেন। আপনাদের একটা সরকারি কাজের জন্য সেই কাকদ্বীপে যেতে হয়। আগামী দিনে আর সেই কষ্ট করতে হবে না। আমি প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, আগামী দিনে যাতে পাথরপ্রতিমা এবং গোসাবা–সহ সংলগ্ন এলাকা নিয়ে একটি পৃথক মহকুমা তৈরি করা যায়।’
সুন্দরবনকেও পৃথক মহকুমা করার কথা রয়েছে। তবে এবার সেটা মুখ্যমন্ত্রী কিছু বলেননি। তবে কাজ ভিতরে চলছে বলে সূত্রের খবর। এই মহকুমা গড়ার বিষয়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিঙ্গলগঞ্জ এবং সন্দেশখালির কথাও তোলেন। আর মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ এবং সন্দেশখালির বাসিন্দাদেরও একই অসুবিধা সহ্য করতে হয়। এই দু’টি এলাকা নিয়েও পৃথক মহকুমা তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে। আগামী দিনে এগুলি পৃথক সাবডিভিশন হবে। সেটা হলে মানুষকে আর এত অসুবিধায় পড়তে হবে না।’