এগরার বালিঘাই ফকিরদাস হাইস্কুলে অনুষ্ঠিত রাজ্যস্তরীয় শিক্ষক সম্মেলন ঘিরে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অভিযোগ, পড়ুয়াদের পঠনপাঠন বন্ধ রেখে আয়োজিত হয়েছে এই সম্মেলন। এর পেছনে রয়েছে সংঘ-ঘনিষ্ঠ সংগঠন অখিল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শৈক্ষিক মহাসঙ্ঘ। এর প্রতিবাদে সরব হয়েছেন অভিভাবকরা।
আরও পড়ুন: দক্ষিণে বর্ষা, উত্তরে তীব্র গরম, একাধিক স্কুলে অসুস্থ পড়ুয়ারা, উঠছে ছুটির দাবি
জানা গিয়েছে, এই সম্মেলনের জন্য শনিবার স্কুলে ক্লাস হয়নি। এদিন সকালেই কিছু ছাত্রছাত্রী যথারীতি স্কুলে চলে আসে। কিন্তু তারা ক্লাস না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয়। স্থানীয় অভিভাবকদের একাংশ অভিযোগ করেন, কোনওরকম আগাম নোটিশ ছাড়াই প্রধান শিক্ষক একক সিদ্ধান্তে স্কুল ভবনকে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছেন এই শিক্ষাসংগঠনের জন্য। আদতে এই সংগঠন একটি রাজনৈতিক আদর্শঘেঁষা প্ল্যাটফর্ম।
অভিভাবকদের একাংশ এদিন স্কুলে গিয়ে সরাসরি প্রধান শিক্ষকের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখান। অভিযোগ ওঠে, সম্মেলনের প্রস্তুতির নামে আগের দিন শুক্রবার থেকেই স্কুলে কার্যত ছুটির আবহ তৈরি হয়। তৃণমূল কংগ্রেস বিষয়টিকে ঘিরে সুর চড়িয়েছে। বিধায়ক তরুণকুমার মাইতি কড়া ভাষায় বলেন, একটি শতবর্ষপ্রাচীন বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন বন্ধ রেখে সংঘ ঘনিষ্ঠ সংগঠনকে স্কুলের পরিসর তুলে দেওয়া সম্পূর্ণ অনৈতিক।
এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রীতমপ্রসাদ সিনহা জানান, শুক্রবার সেকেন্ড ইউনিট টেস্ট শেষ হয়েছে। শনিবার ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হার তুলনামূলক কম থাকে। সম্মেলনের আয়োজন স্কুল আওয়ারের বাইরে হচ্ছে। তিনি জানান, শনিবার বিকেল ৩টে থেকে রবিবার বিকেল ৩টে পর্যন্ত অনুষ্ঠান। আয়োজকরা নিয়ম মেনে কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চেয়েছিল। সমস্তদিক বিচার করেই সম্মতি দেওয়া হয়েছে।
যদিও আয়োজকদের দাবি, এটি নিছকই একটি শিক্ষক-সংগঠনের বার্ষিক সম্মেলন। এর সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক সংযোগ নেই। বিজেপির তরফেও স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, এই সংগঠন সংঘের হলেও তা শিক্ষকদের সংগঠন, রাজনৈতিক দলের শাখা নয়। তবু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, একটি স্কুল, যেখানে শতাধিক ছাত্রছাত্রী নিয়মিত পড়াশোনা করে, সেই প্রতিষ্ঠানে একটি সংগঠনের সম্মেলনের জন্য ক্লাস বন্ধ রাখা কতটা যুক্তিযুক্ত? স্কুল পরিচালনার স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।