ঘূর্ণাবর্ত ও নিম্ন চাপের জেরে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। অথচ, ঠিক সেই সময় গরমে নাজেহাল অবস্থা উত্তরবঙ্গবাসীর। দিনভর আকাশে মেঘ জমলেও নেই বৃষ্টির দেখা। বরং বাড়ছে ভ্যাপসা গরম অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে স্কুলপড়ুয়া শিশুদের উপর। গত কয়েক দিনে তুফানগঞ্জ ও শিলিগুড়ির একাধিক স্কুলে অসুস্থ হয়ে পড়েছে পড়ুয়ারা। এই অবস্থায় স্কুলে ছুটির দাবিতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে চিঠি পাঠিয়েছেন কুমারগ্রামের বিজেপি বিধায়ক মনোজ ওরাওঁ।
আরও পড়ুন: টানা বৃষ্টি, DVCর ছাড়া জলে বন্যার আশঙ্কা, ৪ জেলায় নজরদারিতে বিশেষ টিম নবান্নের
বৃহস্পতিবার দুপুরে শিলিগুড়ি গার্লস হাইস্কুলের এক ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অত্যুহা বাগচি জানান, ওই ছাত্রীর স্নায়বিক সমস্যাও ছিল। তবে গরমের প্রভাব উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে তুফানগঞ্জ বিবেকানন্দ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রের নাক দিয়ে রক্ত পড়ে। এনিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। স্কুলের শিক্ষিকা মনিদীপা মণ্ডল জানান, এই নিয়ে টানা দু’দিন স্কুলে পড়ুয়ারা অসুস্থ হয়েছে। এদিকে, তীব্র গরমে প্রাথমিক স্কুলগুলোতেও পড়ুয়াদের উপস্থিতি আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে। গরমে হাঁসফাঁস করছেন শিক্ষক থেকে ছাত্রছাত্রী সকলেই। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি বিধায়ক মনোজ ওরাওঁ বলেন, পড়ুয়াদের কেউ কেউ রক্তক্ষরণে ভুগছে, কেউ অজ্ঞান হয়ে পড়ছে। এটা আর সহনীয় নয়। অবিলম্বে স্কুল বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেই কারণেই শিক্ষামন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
শিলিগুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান দিলীপ রায় জানিয়েছেন, পরিস্থিতির উপর নজর রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শুধু পড়ুয়ারাই নয়, গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়েই গরমে নাজেহাল অবস্থা বাসিন্দাদের। দুপুরের পর রাস্তাঘাট কার্যত ফাঁকা থাকছে। বাইরে বেরোতে বাধ্য হওয়া মানুষদের হাতে গ্লাভস, মুখে রুমাল বা মাস্ক, মাথায় টুপি বা ছাতা থাকতে দেখা যাচ্ছে। অনেক দোকান-পাট, হোটেল ও সরকারি অফিসে চালাতে হয়েছে অতিরিক্ত ফ্যান। অন্যদিকে, ঠান্ডা পানীয়, ডাব ও শরবতের দোকানগুলিতে ছিল উপচে পড়া ভিড়।
আবহাওয়া দফতরের তথ্য বলছে, বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে তা পৌঁছেছে ৩৭ ডিগ্রিতে। এমনকি পাহাড়ের শহর দার্জিলিংয়েও তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে, যা অঞ্চলের স্বাভাবিক গড়ের তুলনায় অনেকটাই বেশি।