তাঁর নিজের চাকরি বহাল থাকা সত্ত্বেও সুপ্রিম কোর্টের রায় মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না ক্যান্সার আক্রান্ত স্কুল শিক্ষিকা সোমা দাস। বছর কয়েক আগে সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছিলেন সোমা। আজ আবারও তাঁকে নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ, কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে আজ (বৃহস্পতিবার - ৩ এপ্রিল, ২০২৫) এসএসসি-র ২০১৬ সালের প্রায় সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। কিন্তু, এক্ষেত্রেও 'মানবিক কারণে' ছাড় পেয়েছেন ক্যান্সার আক্রান্ত সোমা দাস। তাঁর চাকরি শীর্ষ আদালত বাতিল করেনি।সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা তথ্য অনুসারে - অন্যান্য দিনের মতোই এদিনও স্কুলে গিয়েছিলেন বীরভূমের নলহাটি-১ ব্লকের মধুরা হাইস্কুলের বাংলা শিক্ষিকা সোমা। সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রকাশ্যে আসতেই তিনি জানান, এই রায় তাঁর কাছে কাম্য নয়। তিনি মনে করেন, ২০১৬ সালে এসএসসি যে প্যানেল তৈরি করেছিল, তাতে অসংখ্য যোগ্য প্রার্থী ছিলেন। যোগ্য়তার নিরিখেই চাকরি পেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু, আজ তাঁদেরও চাকরি হারাতে হল।এর জন্য রাজ্য় প্রশাসন ও এসএসসি কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন সোমা। তাঁর মতে, যোগ্য প্রার্থীদের সম্পর্কে সমস্ত তথ্য এসএসসি-র কাছে ছিল। কিন্তু, এসএসসি কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে আদালতে এক-একবার, এক-এক ধরনের তথ্য পেশ করেছে। ফলত, আদালতের পক্ষে যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করা সম্ভব হয়নি। সেই কারণেই আজ অযোগ্যদের পাশাপাশি যোগ্যদেরও চাকরি হারাতে হল। যেটা একেবারেই কাঙ্ক্ষিত নয়।সোমা বলেন, যোগ্য প্রার্থীদের চাকরির উপর বহু সংসার নির্ভর করে। এদিনের পর সেই সমস্ত পরিবারগুলি নতুন করে বিপদ ও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে গেল। তাঁর প্রশ্ন, এবার ওই চাকরিহারা যোগ্য প্রার্থীরা সংসার চালাবেন কীভাবে?উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে সোমা দাস নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের (এসএলএসটি) পরীক্ষায় বসেছিলেন। অভিযোগ ছিল, মেধাতালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও তিনি তাঁর প্রাপ্য চাকরি পাননি। যার জেরে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন। এরই মধ্যে ২০১৯ সালে তাঁর শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। অসুস্থ শরীর নিয়েও সোমা আন্দোলন চালিয়ে যান, নিয়মিত আদালতে হাজির হয়ে মামলা লড়েন।বিষয়টি নজরে আসার পর কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের 'অনুরোধে' ২০২২ সালে সোমাকে স্কুল শিক্ষিকার চাকরি দেওয়া হয়। সেই থেকে চাকরি করছেন তিনি।পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ২২ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্ট দুর্নীতির অভিযোগে এসএসসি-র ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল করলেও সোমাকে তার বাইরে রাখা হয়। এবার সুপ্রিম কোর্টও একই পদক্ষেপ করল।