শীত–গ্রীষ্ম–বর্ষা এই তিন কালেই পর্যটকদের ভিড় দেখা যায় শৈলশহরে। সারাবছরই এই পর্বত দর্শনে এবং উত্তরবঙ্গ ঘুরে দেখার জন্য পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে। আর সব পর্যটকই একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নেন দার্জিলিংয়ের ম্যালে বসে কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শন করে। এবার এই দার্জিলিংয়ের ম্যাল রোডের আশেপাশে কোনও বেআইনি নির্মাণ যাতে না হয় সেটা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে দার্জিলিং পুরসভাকে। কলকাতা হাইকোর্ট এই নির্দেশ দিয়েছে।
বেআইনি নির্মাণ হলে দার্জিলিং ম্যাল তার স্বাভাবিক সৌন্দর্য হারাবে। পর্যটকদের কাছে সেটা পর্বত দর্শনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই দার্জিলিং পুরসভাকে নিশ্চিত করতে হবে ম্যালে বেআইনি নির্মাণ হবে না। এই বেআইনি নির্মাণ হওয়ার অভিযোগে নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় শুক্রবার এই নির্দেশই দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই বিষয়ে বিচারপতি অমৃতা সিনহা নির্দেশ দেন, ওই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে দার্জিলিং পুরসভাকে রিপোর্ট দিতে হবে। এখন সেখানে ঠিক কী পরিস্থিতি তা উল্লেখ করতে হবে রিপোর্টে। এমনকী এই মামলায় এবার জিটিএ’কেও নোটিশ দেওয়ারও নির্দেশ দেন বিচারপতি।
আরও পড়ুন: উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য ‘বিশেষ বাস’ চালানো হবে, পরিষেবা–সহ রইল সূচি
গোটা রাজ্যেই এখন বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে কাজ হচ্ছে। কলকাতা শহরের ক্ষেত্রেও আগে কলকাতা হাইকোর্ট বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কড়া নির্দেশ দিয়েছিল। তাতে অবস্থা খানিকটা পাল্টেছে। কারণ কলকাতায় আবার বাড়ি হেলে পড়ছিল। সেটা বেআইনি নির্মাণের জন্যই হয়েছে বলে কলকাতা পুরসভার দাবি। কিন্তু দার্জিলিং ম্যাল অত্যন্ত জনপ্রিয় স্পট। সেখানে বা তার আশেপাশে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করা হয়। আর ওই মামলাকারীর আইনজীবী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টে দাবি করেন, দার্জিলিংয়ের ম্যাল রোডের ধারে বেআইনি নির্মাণ করা হচ্ছে। তার জেরে হকারদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দার্জিলিং পুরসভা পুনর্বাসন করলে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু জিটিএ এখানে কোনও নির্মাণ করতে পারে না। কারণ সেক্ষেত্রে দার্জিলিং পুরসভার অনুমোদন নেওয়ার দরকার আছে।
এই অভিযোগ তোলার পর জোরদার সওয়াল–জবাব হয়। দার্জিলিং পুরসভার পক্ষ থেকে এই বিষয়ে আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার কলকাতা হাইকোর্টকে জানান, হকারদের পুনর্বাসনের জন্য ম্যাল রোডের যে অংশ সম্প্রসারণ করা হচ্ছে তাতে দার্জিলিং পুরসভাই সেখানে নির্মাণ কাজ করছে। কারণ ম্যালে আর হকারদের রাখা হবে না। আর কোনও বেআইনি নির্মাণ ম্যাল এবং সংলগ্ন এলাকায় করা হচ্ছে না। আর এই কাজ করার জন্য দার্জিলিং পুরসভার কাছে বাড়তি অর্থ না থাকায় জিটিএ সেই অর্থ দিয়ে সাহায্য করছে। এখানে দার্জিলিং পুরসভা এবং জিটিএ যৌথভাবে কাজ করছে। দু’পক্ষের সওয়াল–জবাব শুনে বিচারপতি অমৃতা সিনহা নির্দেশ দেন, সমস্ত তথ্য দার্জিলিং পুরসভাকে হলফনামা আকারে চার সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে। আর জিটিএ’র বক্তব্য শোনার জন্য তাদেরও নোটিশ দিতে হবে।