এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এটাকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলেই চালাতে চেয়েছিল গোটা পরিবার এবং সদস্যরা। বিষয়টি এলাকায় এবং অন্যান্য আত্মীয়স্বজনের মধ্যে তেমনটাই বলা হয়। তাই শ্মশানে চোখের জলের সঙ্গে দাহকাজ করতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরও দাহ হল না। কারণ এক শ্মশান কর্মীর ওই মৃতদেহ দেখে সন্দেহ হয়। কারণ মৃতের গলায় কালশিটের দাগ দেখতে পান তিনি। তখন ওই শ্মশান কর্মীর মনে হয় এটা কোনও ভাবেই স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। তারপর সন্দেহ হয় মৃত্যুর শংসাপত্র দেখে। বিষয় বেগতিক দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
ওই বৃদ্ধের দাহকাজের আগে শ্মশানকর্মীর চোখে কালশিটের দাগ সন্দেহ তৈরি করে। আর মৃতের পরিবার যে মৃত্যুর শংসাপত্র নিয়ে এসেছিল সেটা এক হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেট। যেটা শ্মশানে একেবারেই চলে না। তাই সব দিক থেকে সন্দেহজনক ব্যাপার মনে হতেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ শ্মশান থেকে ওই মৃতদেহ নিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দিল সুতরাং দাহকাজ হল না উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয়। বনগাঁ থানার গাড়াপোতা এলাকার বৃদ্ধ ধ্রুব কুণ্ডু (৬৫) মারা গিয়েছেন। আজ সকালে মৃতের পরিবার মৃতদেহ নিয়ে ভূপেন্দ্রনাথ শেঠ স্মৃতি মহাশ্মশানে পৌঁছয়। সেখানেই ঘটে বিপত্তি।
আরও পড়ুন: ‘যারা বলছে হচ্ছে না, তাঁদের বলব এসে দেখুন’, শালবনির মঞ্চ থেকে বিরোধীদের বার্তা মমতার
পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের কাছ থেকে ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে যায় শ্মশানে। কিন্তু কেন এমন করল তারা? এই প্রশ্মের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। ওই ডেথ সার্টিফিকেটে আবার মৃত্যুর কারণ হিসাবে উল্লেখ রয়েছে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের লেখা ডেথ সার্টিফিকেট শ্মশানে মান্যতা পায় না। সেটা জেনেও কেন এমন করা হয়েছিল? উঠছে প্রশ্ন। শ্মশানের কর্মীরা দেখতে পান, ওই বৃদ্ধের গলায় কালসিটের দাগ। সেটাই সন্দেহ তৈরি করে। আর ফিসফাস শুরু হয়। বৃদ্ধকে কি খুন করা হয়েছে? প্রশ্ন শ্মশান কর্মীদের।
শ্মশান কর্মীরা কোনও ঝুঁকি না নিয়ে সবটা ফোন করে শ্মশান থেকে জানানো হয় বনগাঁ পুরসভার পুরপ্রধানকে। তখন পুরপ্রধান ওই শ্মশান কর্মীদের নির্দেশ দেন, দ্রুত পুলিশে খবর দিতে। খবর পেয়েই শ্মশানে এসে হাজির হয় বনগাঁ থানার পুলিশ। আর মৃতদেহ উদ্ধার করে। ওই বৃদ্ধের মৃতদেহ তৎক্ষণাৎ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। আজই মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে বলে সূত্রের খবর। এই মৃত্যুর নেপথ্যে অন্য কোনও রহস্য আছে? উত্তর খুঁজছে পুলিশ। আর তাই এখন মৃতের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন বনগাঁ থানার তদন্তকারী অফিসাররা।