ভুল হয়ে গিয়েছে বিলকুল। আর এই ভুলের জেরে এখন পরিবেশ তপ্ত হয়ে উঠল। এমন ভুল যে হবে তা কেউ কল্পনাও করেননি। আর এই ভুলের সঙ্গে আদিবাসীদের আবেগ জড়িয়ে। যার জন্য আদিবাসীরা প্রতিবাদে নেমে পড়েছেন। বাঁকুড়া স্টেশন নতুন করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। আর সেখানেই দেখা গিয়েছে, অলচিকি হরফে লেখা ‘বাঁকুড়া’ বানান ভুল হয়েছে। আর এই বিষয়টি সামনে আসতেই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন আদিবাসীরা। এই ভুল ঠিক করার জন্য স্টেশন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হলেও ওই অলচিকি হরফে লেখা ভুল ‘বাঁকুড়া’ বানান ঠিক হয়নি বলে অভিযোগ। আজ, সোমবার অল আদিবাসী সাঁওতাল স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বাঁকুড়া স্টেশন ম্যানেজারকে প্রতিবাদপত্র দেওয়া হয়েছে।
আদিবাসীদের ভাষা অলচিকি। যা নিয়ে রাজ্য সরকার অত্যন্ত সতর্ক। এই ভাষাকে খুব সম্মান দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সেখানে রেলের পক্ষ থেকে এমন কাজ কিছুতেই মেনে নিতে নারাজ আদিবাসীরা। দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে আদ্রা ডিভিশনের বন্দরে বাঁকুড়া স্টেশনকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু করেছে। আর এই স্টেশনে প্রবেশ এবং প্রস্থানের পথ চিহ্নিত করতে নতুন করে নাম লেখা হয়েছে। আর ওই স্তম্ভে হলুদ ও কালো রঙে অলচিকি হরফে লেখা ‘বাঁকুড়া’ বানান ভুল বলে অভিযোগ তোলে আদিবাসী সংগঠন। তাতেই ব্যাপক ঝড় উঠেছে প্রতিবাদের। এই বিষয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে সংঙ্গেরি হেমব্রম জানান, প্রথমে অলচিকি হরফে লেখা বাঁকুড়ার হরফগুলি খুব ছোট করে লেখা হয়েছে। তার উপর বানান ভুল।
আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামে দু’হাজার কোটির জাহাজ মেরামতির কারখানা হবে, শুভেন্দুর দাবি খারিজ বন্দরের
এই ঘটনায় আদিবাসীরা অপমানিত বোধ করছেন। অলচিকি হরফে লেখা ‘বাঁকুড়া’ বানান ভুল। এই ভুল কিছুতেই ঠিক করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। চোখে আঙুল দিয়ে দেখালেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে বাঁকুড়ার স্টেশন ম্যানেজার অনিরুদ্ধ দে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে রেল দফতর কেন্দ্রীয় সরকারের। তাই এমন ভুলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তাতে অস্বস্তি বেড়েছে রেলের। সুর সপ্তমে চড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসও। বাঁকুড়ার তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘আদিবাসী ছাত্র সংগঠন প্রতিবাদ করে চিঠি জমা দিয়েছে। অবিলম্বে এই ভুল সংশোধন করা হোক। না হলে রেলমন্ত্রীকে অভিযোগ করতে বাধ্য থাকব।’
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সকলকে সুযোগ করে দেন। সবরকম উৎসবকে যেমন তিনি প্রাধান্য দেন তেমন সব ধর্ম, ভাষা এবং সংস্কৃতিকেও সম্মান দেন। আর একাধিক ভাষায় কথা বলতে জানেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কয়েকটি ভাষা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী রীতিমতো চর্চা করেন বলে খবর। একাধিক ভাষাকে গুরুত্ব দেন একইরকমভাবে। সাঁওতালি থেকে শুরু করে রাজবংশী, অলচিকির মতো লুপ্তপ্রায় ভাষাকে পুনরুজ্জীবিত করেছেন তিনি। তাই তিনি প্রশংসাও পেয়েছেন। সেখানে রেলের এমন ভুল বানান লেখা আবেগে আঘাত লাগার সামিল বলে মনে করা হচ্ছে।