আলিপুরদুয়ারের মহিলা আইএএস অফিসারের সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগে চার মদ্যপ যুবককে গ্রেফতার করল আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ। আলিপুরদুয়ারের মহকুমা শাসক প্রিয়দর্শিনী ভট্টাচার্যের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই চার অভিযুক্ত যুবককে।মঙ্গলবার ধৃতদের আলিপুরদুয়ার আদালতে তোলা হলে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত চার যুবকের নাম রঞ্জিত দাস, সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়, অমল ঘোষ ও সঞ্জীব কুশালি। ধৃত এই চারজনের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হলে তাদের জামিন মঞ্জুর করে আদালত। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারা দেওয়ায় বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পান্ডে এপ্রসঙ্গে বলেন, ‘মদ্যপ অবস্থায় বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানো ও বিপর্যয় মোকাবিলা আইন ভঙ্গ করায়, চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। মঙ্গলবার তাদের আদালতে তোলা হয়েছে।’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চারজন ধৃতদের মধ্যে তিনজনই সরকারি কর্মচারী । অভিযুক্ত সুরজিৎ ও সঞ্জীব আলিপুরদুয়ারের ২ নম্বর ব্লকের যশোর ডাঙ্গা হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মী। ওই হাসপাতালে সুরজিৎ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পদে কর্মরত রয়েছে ও সঞ্জীব ফার্মাসিস্ট পদে কর্মরত রয়েছে। অন্য দিকে, অমল ঘোষ শামুকতলা থানার সিভিক ভলান্টিয়ার বলে জানা গিয়েছে।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে রাজাভাতখাওয়া এলাকায়। সন্ধ্যায় করোনার বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করেই একটি প্রাইভেট গাড়িতে রাজাভাতখাওয়া এলাকার বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে ঘুরতে গিয়েছিল ওই চার যুবক। সন্ধ্যায় নেশাগ্রস্থ অবস্থায় রাজাভাতখাওয়া এলাকা থেকে আলিপুরদুয়ারের দিকে ফিরছিল অভিযুক্ত যুবকেরা। সেই সময় ওই রাস্তা দিয়ে আলিপুরদুয়ারের দিকে যাচ্ছিলেন মহকুমাশাসক প্রিয়দর্শিনীদেবী।মহকুমা শাসকের অভিযোগ, তিনি খেয়াল করেন রাস্তার মধ্যেই তার গাড়িকে বারবার ওভারটেক করছিল ওই প্রাইভেট গাড়ি। তিনি দেখতে পান, ওই গাড়ির মধ্যে চারজন যুবক মদ্যপ অবস্থায় রয়েছেন। অভিযোগ, তারা মহকুমা শাসককে লক্ষ্য করে অশ্লীল ভাষায় কটুক্তি ও কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি করতে থাকে। এভাবেই দীর্ঘক্ষণ ধরে ওই গাড়ি মহকুমাশাসকের গাড়িকে একাধিকবার ওভারটেক করতে থাকে। এতে অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়েন ওই আইএএস অফিসার। এরপর তাঁদের গাড়ি রাজাভাতখাওয়া থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে দমনপুর নর্থ পয়েন্ট এলাকায় পৌঁছয়। সেই সময় ওই যুবকদের গাড়ি আটক করেন মহকুমা শাসক। ওই এলাকার পুলিশকে খবর দেন তিনি। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে রাতেই ওই ৪ যুবককে গ্রেফতার করে আলিপুরদুয়ার থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু অভিযোগ উঠে চার যুবকের বিরুদ্ধে জামিন যোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করায় মঙ্গলবার আদালত থেকে জামিন পেয়ে যায় অভিযুক্তরা। মহকুমা শাসক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘যদি আমার সঙ্গেই অভিযুক্তরা এই ধরনের অভব্য আচরণ করে থাকে, তাহলে সাধারণ মহিলাদের নিরাপত্তার কি অবস্থা হবে, তা ভেবে পাচ্ছি না।’