বিবাহ বিচ্ছেদে সম্মতি দেয়নি শীর্ষ আদালত। তাসত্ত্বেও স্বামী দ্বিতীয় বিয়ের চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন স্ত্রী। তা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে বিজ্ঞাপনও দিয়েছিলেন তিনি। তবে কোনও তথ্য ছাড়াই এমন বিজ্ঞাপনের ফলে মানহানির অভিযোগ তোলেন স্বামী। সেই মামলায় স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তোলার জন্য পোর্ট ব্লেয়ারের ওই মহিলাকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করল কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: আদিবাসীদের বলপূর্বক সরানোর অভিযোগ, দেউচা পাঁচামি নিয়ে হলফনামা তলব হাইকোর্টের
জানা গিয়েছে, এই দম্পতি ১৯৯৪ সালে বিয়ে করেছিলেন। তাঁদের একটি সন্তান রয়েছে। এরপর স্বামী ২০০৫ সালে স্ত্রীর বিরুদ্ধে নিষ্ঠুরতার অভিযোগ তুলে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন আদালতে।সেই মামলায় জয়ী হন তিনি। পরে ২০০৮ সালে স্ত্রী নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান। সেই মামলায় রায় যায় মহিলার পক্ষে। এরপর মহিলার স্বামী সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। তবে সুপ্রিম কোর্ট কোনও হস্তক্ষেপ করেনি। এরপর দেখা যায় ওই মহিলা একটি দৈনিক পত্রিকায় কিছু সময়ের ব্যবধানে দুটি বিজ্ঞাপন দেন। তাতে তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে অন্য এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ তোলেন এবং সেই মহিলাকে বিয়ের চেষ্টার অভিযোগ তোলেন। এমন বিজ্ঞাপন চোখে পড়তেই ফের আদালতে ছোটেন ওই ব্যক্তি। তিনি স্ত্রী এবং পত্রিকার সম্পাদকের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ তুলে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
নিম্ন আদালত অবশ্য সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। পরে আপিল আদালত স্ত্রীকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ঘটনায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মহিলা। কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের এজলাসে মামলার শুনানি হয়। মহিলা দাবি করেন, কারও মানহানির উদ্দেশ্য ছিল না তাঁর, বরং সমাজের মঙ্গলের জন্য তিনি এটা করেছিলেন। যদিও পত্রিকার সম্পাদককে অব্যাহতি দেয় আদালত। এদিকে, ওই মহিলা তাঁর স্বামীর সঙ্গে অন্য কোন মহিলার সম্পর্ক রয়েছে সেই তথ্য প্রকাশ করতে পারেননি। এই বিজ্ঞাপনের ফলে যে ওই স্বামীর সুনাম ক্ষুন্ন এবং মানহানির যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে বলে মন্তব্য করে হাইকোর্ট। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘মানহানির মাধ্যমে সুনামের ক্ষতি পরিমাপ করা কঠিন। তবে দেশের প্রত্যেকেরই মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে।’ আদালত সূত্রের খবর, ওই মহিলা আন্দামানের পূর্ত বিভাগে কর্মরত। অন্যদিকে, তাঁর স্বামী পোর্ট ব্লেয়ার পুরসভায় কর্মরত। মহিলার পেশাগত অবস্থান বিবেচনা করে আদালত ওই ব্যক্তির মানহানির জন্য মহিলাকে ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।