লাফিয়ে বাড়ছে 'ডিজিটাল অ্যারেস্ট' স্ক্যাম। বলা হচ্ছে, যত বেশি মানুষ ইউপিআই করে ডিজিটাল পেমেন্ট করছেন, অনলাইন জালিয়াতির ঘটনাও তত বেড়েছে। অনলাইনে পেমেন্ট করে লক্ষ লক্ষ টাকা খোয়াচ্ছেন ব্যবহারকারীরা। ন্যাশনাল পেমেন্ট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (NPCI) এই ক্রমবর্ধমান কেলেঙ্কারি সম্পর্কে মানুষকে সতর্কও করেছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী 'মন কি বাত'-এ উল্লেখ করেছেন যে এই ধরনের কেলেঙ্কারিতে ভারতীয়রা ১২০.৩ কোটি টাকা হারিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, এনপিসিআই সবাইকে সতর্ক ও অবগত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। যাতে ভারত আরও ডিজিটাল প্রতারকের কবলে না পড়ে।
এনপিসিআই তার বিবৃতিতে বলেছে, সারা দেশ এখন ডিজিটাল লেনদেন করে। এই লেনদেন অবশ্যই নিরাপদ এবং সুবিধাজনক, তবে জালিয়াতি এড়াতে এগুলি সাবধানে করতে হবে৷ আপনার সঙ্গে যে স্ক্যাম হতে চলেছে, সময়ের আগে তা চিহ্নিত করতে পারলে আপনি নিজেকে এবং নিজের প্রিয়জনকে রক্ষা করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: (BSNL-এর নতুন অফার: 1300 জিবি ডেটা এবং 6 মাসের ব্রডব্যান্ড সাবস্ক্রিপশন)
‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ কী
'ডিজিটাল অ্যারেস্ট' স্ক্যাম একটি অনলাইন কৌশল, যেখানে অপরাধীরা আইন প্রয়োগকারী বা সরকারু অধিকর্তা হওয়ার ভান করেন। তাঁরা মানুষকে ভয় দেখান এই বলে যে তাঁরা তদন্তাধীন বা গ্রেফতার হতে পারেন। স্ক্যামারদের লক্ষ্য ভয়ের অনুভূতি তৈরি করে ব্যক্তিগত তথ্য বা টাকা হাতিয়ে নেওয়া।
ডিজিটাল অ্যারেস্ট স্ক্যাম কীভাবে সনাক্ত করবেন?
১. আইনি অফিসারদের সঙ্গে অপ্রত্যাশিত যোগাযোগ: আপনি একজন পুলিশ অফিসার, সিবিআই এজেন্ট, ট্যাক্স আধিকারিক বা কাস্টমস এজেন্ট বলে দাবি করেন, এমন কারও কাছ থেকে হঠাৎ কল বা বার্তা পেলে সতর্ক থাকুন। তাঁরা আপনাকে বা আপনার পরিবারকে মানি লন্ডারিং, ট্যাক্স ফাঁকি বা মাদক পাচারের মতো গুরুতর অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করতে পারেন।
২. ভয় দেখানোর ভয়ংকর কৌশল: স্ক্যামাররা প্রায়ই ভিডিয়ো কল ব্যবহার করেন, যেখানে তাঁরা পুলিশের ইউনিফর্ম পরে, সরকারি লোগো ব্যবহার করেন, বা ব্যাকগ্রাউন্ডে পুলিশ স্টেশনের মতো আওয়াজ করেন। আপনি অবিলম্বে সাড়া না দিলে তাঁরা আপনাকে গ্রেফতার বা আইনি ঝামেলার হুমকি দেন।
৩. তথ্য বা অর্থের জন্য অনুরোধ: তাঁরা ব্যক্তিগত বিবরণ চাইতে পারেন বা টাকা দাবি করতে পারেন। তাঁরা এটা দাবি করতে পারেন যে আপনার নাম বাঁচাতে বা মামলার সমাধান করতে হলে বিবরণ বা টাকা দিতে হবে। এরপর আপনাকে 'তদন্ত ফি' হিসাবে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা ইউপিআই আইডিতে অর্থ স্থানান্তর করতে বলা হতে পারে। স্ক্যামাররা আপনাকে বোঝানোর জন্য 'টাকা ফেরত দেওয়া হবে' বা 'তদন্তে সহায়তা' এর মতো বাক্যাংশ ব্যবহার করতে পারেন।
আরও পড়ুন: (জোম্যাটোর নতুন অ্যাপ ব্লিঙ্কইট বিস্ট্রো: 10 মিনিটে খাবার সরবরাহ)
স্ক্যাম থেকে বাঁচার উপায়
বলা বাহুল্য, উপরে লেখা সতর্কতা পয়েন্টগুলি মাথায় রাখতে পারলে, আপনি এই স্ক্যামের শিকার হওয়া এড়াতে পারেন। ডিজিটাল অ্যারেস্ট স্ক্যাম থেকে নিরাপদ থাকার টিপস আরও কিছু টিপস রইল।
১. যাচাই করুন: আপনি যদি আইনি সমস্যা সম্পর্কে একটি অপ্রত্যাশিত কল বা বার্তা পান, শান্ত থাকুন এবং অবিলম্বে কোনও পদক্ষেপ করবেন না। স্ক্যামাররা দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আপনাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেন। মনে রাখবেন, প্রকৃত সরকারি সংস্থা বা পুলিশ কখনই টাকা চাইবে না বা ফোন বা ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে মামলা পরিচালনাও করবে না। তাই যে কোনও কিছু করার আগে সর্বদা অফিসিয়াল সরকারি নম্বর বা বিশ্বস্ত সূত্রে যোগাযোগ করে কলারের পরিচয় যাচাই করুন।
২. সন্দেহজনক কার্যকলাপ রিপোর্ট করুন: আপনি যদি মনে করেন কে আপনার কাছে আসা কোনও কল বা মেসেজ একটি স্ক্যাম হতে পারে, তাহলে অবিলম্বে এটি রিপোর্ট করুন। ১৯৩০ নম্বরে ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম হেল্পলাইনে কল করুন অথবা কেলেঙ্কারির রিপোর্ট করতে /-এ টেলিযোগাযোগ বিভাগের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন।