প্রবল পরাক্রমী ব্যাটিং লাইন-আপ ছিল। নিজেদের দিনে যে কোনও দলের বোলিং স্রেফ গুঁড়িয়ে দিত। বোলিং বিভাগও নেহাত মন্দ ছিল না। তা সত্ত্বেও ১৫ বছরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের (আরসিবি) ক্যাবিনেটে একবারও আইপিএল ট্রফি ঢোকেনি। আইপিএল জেতা হয়নি বিরাট কোহলিরও। তবে ওই একটা ট্রফি জিততে না পারায় যে তাঁর দুনিয়া শেষ হয়ে গিয়েছে, এমনটা মনে করেন না প্রাক্তন আরসিবি অধিনায়ক। বরং তাঁর মতে, ট্রফি জেতাটা তাঁদের হাতে নেই। তাঁরা মাঠে নেমে নিজেদের উজাড় করে দিতে পারেন। আর লাল-কালো জার্সি পরে কতটা নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছেন, সেটাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
বুধবার বিরাট সেই কথাগুলি যাঁদের উদ্দেশ্যে বলেন, সেই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের মহিলা দলের সদস্যরা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিলেন। উদ্বোধনী উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগের প্রথম পাঁচটি ম্যাচেই হারের মুখ দেখতে হয়েছিল স্মৃতি মন্ধানাদের। অথচ খাতায়কলমে এবার টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা দল তৈরি করেছে আরসিবি। এলিস পেরি, রিচা ঘোষদের মতো তারকা থাকা সত্ত্বেও টানা পাঁচটি ম্যাচে হারের কষ্ট কিছুতেই চাপতে পারছিলেন না স্মৃতিরা। সেজন্য বুধবার ইউপি ওয়ারির্সের ম্যাচের আগে স্মৃতিদের পেপ-টক দেন বিরাট। যাঁদের অনেকেই আগে কখনও এরকম পরিস্থিতিতে পড়েননি। একেবারে মন খুলে রিচাদের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন বিরাট। নিজের উদাহরণ দিয়ে বোঝান যে টানা পাঁচটি ম্যাচে হেরে গেলে ভেঙে পড়া স্বাভাবিক। কিন্তু সেটাই শেষ হয়।
আরও পড়ুন: WPL 2023: রিচা-কনিকার যুগলবন্দিতে শাপমুক্তি মন্ধনাদের, উইমেন্স প্রিমিয়র লিগে প্রথম জয়ের মুখ দেখল RCB
বিরাটের কথায়, 'আমি ১৫ বছর ধরে আইপিএল খেলছি। কিন্তু আমি এখনও আইপিএল জিততে পারিনি। কিন্তু সেটার কারণে প্রতি বছর আমার মধ্যে যে উন্মাদনা, উত্তেজনা থাকে, সেটা কমে যায়নি। আমি সেটাই করতে পারি। সেই ততটাই নিজেকে উজাড় করে দিতে পারি। আমি যে ম্যাচে খেলি, যে টুর্নামেন্টে খেলি, আমি সেই চেষ্টা করতে পারি। (নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার পর) আমরা যদি জিতি, তাহলে দারুণ বিষয়। কিন্তু আমরা জিততে না পারলে আমি মৃত্যুর সময় এটা ভাবতে বসব না যে আমি যদি আইপিএল জিততাম, তাহলে আনন্দের সঙ্গে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে পারতাম।'
আরসিবির প্রাক্তন অধিনায়ক জানান, তাঁর অধীনে একবার টানা ছ'টি ম্যাচ হেরেছিল ব্যাঙ্গালোর। সেইসময় নিজেকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। মনে হচ্ছিল যে আর কিছু বাকি নেই। সবকিছু শেষ হয়ে গিয়েছে। ভিতরের উন্মাদনাই যেন মরে গিয়েছিল। কিন্তু পরেরবার দলে একাধিক নয়া খেলোয়াড় আছেন। তাঁরা যেন নয়া প্রাণের সঞ্চার করেন। শুষ্ক হয়ে যাওয়া ভূপ্রান্তরে সবুজের আভা নিয়ে আসেন। তাতে ভর করে সেই হতাশা কাটিয়ে ওঠেন। আরসিবিও টানা তিনবার প্লে-অফে ওঠে।
আরও পড়ুন: WPL 2023: অন্ধকারে ডুবে যাওয়া RCB-তে আনলেন সৌভাগ্য, বিরাটের টনিকের পর প্রথম জয় স্মৃতিদের
বিরাটের কথায়, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি কতটা খারাপ আছে, সেটা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে সবসময় সামনের দিকে থাকা সুযোগে মনোযোগ দেওয়া উচিত। এটার একটি উলটো দিকও আছে। কারণ বর্তমানে ওই যে পরিস্থিতি আছে, সেটা আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। (তবে যাই হোক) আইপিএল না জিতলেও আমি সবসময় বিশ্বাস করি যে আমাদের সমর্থকরা বিশ্বের সেরা। কারণ আমরা আরসিবির হয়ে প্রতিটি ম্যাচে নিজেদের উজাড় করে দিয়েছি। সেটাই আরসিবি সমর্থকদের কাছে সবথেকে স্পেশাল বিষয়।’
আরসিবির প্রাক্তন অধিনায়ক আরও বলেন, ‘এখন যখন ওঁদের (সমর্থকদের) দেখি, তখন ওঁদের মুখের হাসি দেখে বুঝতে পারি, আরসিবির প্রতি আমাদের যে অঙ্গীকার আছে, সেটায় বিশ্বাস করেছেন ওঁরা। আমরা সেটাই করতে পারি। আমরা প্রতি বছর ওঁদের হাতে ট্রফি তুলে দেওয়ার নিশ্চয়তা দিতে পারি না। কিন্তু নিজেদের ১১০ শতাংশ উজাড় করে দেওয়ার নিশ্চয়তা দিতে পারি আমরা।’
) রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।