লতা মঙ্গেশকরকে এনে টাকা তুলে দল গঠন করেছিলেন, প্রয়াত সেই ইস্টবেঙ্গল সচিব

ইস্টবেঙ্গল তাবুতে ফের শোকের ছায়া। প্রয়াত লাল-হলুদের প্রাক্তন ফুটবল সচিব সুপ্রকাশ গড়গড়ি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। দীর্ঘদিন বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। গোটা দেশ যখন স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে ব্যস্ত তখন গতকাল গভীর রাত ১টায় কালীঘাটের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। রেখে গেলেন স্ত্রী এবং বিবাহিতা কন্যাকে। প্রয়াত লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল ভাই ও দিদির মতো। পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, তাঁর মৃত্যুর পর থেকেই সুপ্রকাশ মানসিকভাবে অনেকটা ভেঙে পড়েন।কলকাতার ময়দানে দাপুটে কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে বাঁচিয়েছেন সংকটের মুখ থেকে। ১৯৮৮ সালে ক্লাবের অর্থনৈতিক অবস্থা বেশ দুর্বল। দল গঠন কি করে হবে তা নিয়ে চিন্তায় অন্যান্য কর্মকর্তারা। সেই সময় গড়গড়ি প্রস্তাব দেন সুরের রানী স্বর্গীয় লতা মঙ্গেশকরকে দিয়ে একটি অনুষ্ঠান করালে কেমন হবে। অন্যান্যরা এক কথাতেই রাজি। লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল সুপ্রকাশের। তার এক কথাতেই রাজি হয়ে যান লতা মঙ্গেশকর। ইস্টবেঙ্গলে আনা হল তাঁকে। করা হয় জমকালো অনুষ্ঠান। সেই সময় ২০ লক্ষ টাকা অনুষ্ঠান থেকে আয় করে মশাল বাহিনী।তবে এখানেও কাজ করেছিল তাঁর সুচতুর বুদ্ধি। লতা মঙ্গেশকরকে যে দল গঠনের টাকা তোলার জন্য নিয়ে আসা হচ্ছে, সে কথা একবারও প্রচার করা হয়নি ক্লাবের পক্ষ থেকে। বলা হয় প্রি-প্লাটিনাম জুবিলি উৎসবের অঙ্গ হিসেবে আনা হচ্ছে তাকে। তার তিন দিন পরই জ্যোতিষ গুহ ফুটবল টুর্নামেন্ট হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে লতা মঙ্গেশকরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল আজীবন সদস্যপদ।শুধু দল গঠনের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া নয় বহু নামি ফুটবলারকে দলে সই করিয়েছিলেন তিনি। সাম্প্রতিক অতীতেও তিনি ইস্টবেঙ্গলের বিরোধী গোষ্ঠীর হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। তবে বয়স হয়ে যাওয়ায় খুব একটা শিবিরে আসা হতো না তাঁর। স্বাভাবিকভাবেই এহেন ফুটবল প্রশাসকের মৃত্যুতে ইস্টবেঙ্গল সহ ফুটবলের ময়দানে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। স্বাধীনতা দিবসের দিনেই এই দক্ষ প্রশাসককে হারাল বাংলার ফুটবল। এছাড়াও ক্লাবের এক কিংবদন্তি ফুটবলারের বিয়ে দিয়েছিলেন সুপ্রকাশ গড়গড়ি। ক্যাথির সঙ্গে চিমা ওকোরির সমর্কের কথা কারোর অজানা নয়। ইস্টবেঙ্গল কর্তার উদ্যোগে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন তারা।